প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বহাল রাখবে ভারত
ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ বহাল রাখবে বলে জানিয়েছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। ভারত ও চীন তাদের বিতর্কিত হিমালয় সীমান্তে টহলদারি নিয়ে এক চুক্তিতে পৌঁছানোর কয়েক দিন পর এ কথা বললেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যকার এই চুক্তি চার বছর ধরে চলা সামরিক অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়ে দুই এশীয় পরাশক্তির মধ্যে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের উন্নতি ঘটাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২০ সালে সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছিল। এর ফলে ভারত ও চীনের মধ্যকার পুঁজি, প্রযুক্তি ও মেধার বিনিময় হার কমে যায়।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ারটন বিজনেস স্কুলে বক্তব্য রাখার সময় ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ বলেন, "আমাদের বিনিয়োগ দরকার বলেই চোখ বন্ধ করে যেকোনো সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) গ্রহণ করতে পারি না। এর উৎস সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।"
সীতারমণ বলেন, "আমরা ব্যবসা চাই, বিনিয়োগ চাই। তবে আমাদের কিছু সুরক্ষা ব্যবস্থাও প্রয়োজন কারণ ভারত এমন একটি অঞ্চলে অবস্থিত, যেটি অত্যন্ত সংবেদনশীল।"
তিনি আরও বলেন, বিনিয়োগকারীর পরিচয়ের চেয়ে কখনো কখনো বিনিয়োগের উৎস নিয়েই সরকারের উদ্বেগ বেশি থাকে। "তাই জাতীয় স্বার্থে এমন বিধিনিষেধ বজায় থাকবে।"
বিশ্বের দুই বৃহত্তম জনবহুল দেশের মধ্যে বিরোধ বিদ্যমান থাকার ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো দ্রুত বর্ধনশীল খাতে সহযোগিতার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সম্পর্কের উন্নতি থমকে আছে। ২০২০ সালে ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ যাচাই-বাছাই ও নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স বাড়ায়, যদিও কোনো দেশের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি।
এই পদক্ষেপকে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ঠেকানোর কৌশল হিসেবে দেখা হয়, যা বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগকে থামিয়ে দেয়। যেমন: বিওয়াইডি এবং গ্রেট ওয়াল মোটরের মতো চীনা গাড়ি নির্মাতাদের বিনিয়োগ আটকে গেছে এবং চীনা অংশীদারদের সাথে থাকা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো লোকশানের মুখোমুখি হয়েছে।
আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল এবং পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক চীনের তুলনায় অনেক কম। চীন গত বছর ভারতের সবচেয়ে বড় পণ্য সরবরাহকারী ছিল এবং দেশটির শিল্প পণ্যের প্রধান উৎস।
২০২০ সালের সংঘর্ষের পর থেকে ভারতের চীন থেকে পণ্যের আমদানি ৫৬ শতাংশ বেড়েছে, যার ফলে চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৮৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।