প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, প্রশাসনিক ভবনে তালা
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে। এরপর বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও একটি ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেননি তারা। যার প্রেক্ষিতে ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়। ২৪ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। এছাড়া প্রশাসন বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক ও রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা অপমানজনক। প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা সব একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সুলতানা আহমেদ বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছি। সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল ভাইস চ্যান্সেলর সাথে কথা বলবেন। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে দেওয়া বিবৃতি ভুল করে দেওয়া হয়েছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।"
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের টানানো দুইটি ব্যানার ছিড়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় কিছু বহিরাগত এতে যোগ দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রক্টোরসহ মোট ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ও আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের ব্যানার ছেঁড়াকে রাষ্ট্রবিরোধী কাজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ আতাউর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিষয়টি রাষ্ট্রবিরোধী, ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় কর্মকাণ্ড। এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা রবিবার আন্দোলনে নামে।