দুধের ঘাটতি মেটাতে আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
দুধের ঘাটতি মেটাতে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, 'দুধ উৎপাদনের ঘাটতি মেটাতে গিয়ে যেভাবে আমদানি নির্ভরতা বাড়ছে, এটাকে আমরা বদলাতে চাই।'
আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ফিশারিজ অ্যান্ড লাইভস্টক জার্নালিস্টস ফোরাম (এফএলজেএফ) আয়োজিত 'দেশের ডেইরি খাতের সমস্যা-সম্ভবনা ও করণীয়'- শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, 'আমদানি নির্ভরতা থাকলে দেশীয় সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারবো না। বিশেষ করে বিদেশি কোম্পানি, প্রযুক্তি ও আমদানি নির্ভরতা বাদ দিতে হবে। গ্রামের ঘরে ঘরে ক্ষুদ্র খামারি আছে। অনেকগুলো সমস্যার কারণে তারা গরু পালন করতে পারে না। সেগুলো আমরা সমাধান করতে পারি। পাশাপাশি বড় কোম্পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে, সাধারণ কৃষকের দুধ শহরে আনার ব্যবস্থা করতে হবে।'
গণমাধ্যমে প্রাণিসম্পদ গুরুত্ব পায় না উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, 'সাংবাদিকতায় প্রাণিসম্পদ খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তবে আমাদের যে আমিষ জাতীয় খাবারের জোগান, তা আসে প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য থেকে। কাজেই এ বিষয়ে যদি আমরা উন্নয়নের চেষ্টা না করি, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।'
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এ.টি.এম. মোস্তফা কামাল বলেন, 'একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ খাতের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রসেসিং এর বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। এফএলজেএফ'র পক্ষ থেকে এ খাতের ওপর একটি কিনোট পেপার উপস্থাপন করা হয়। এতে বলা হয়, চার বছরে গো-খাদ্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। বর্তমানে সরবরাহ ও উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো মাসে মাসে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি করছে, যা খামারিদের চাপে রেখেছে। অনেকে এই চাপে খামার বন্ধ করে দিচ্ছে।'
তিনি বলেন, 'এক্ষেত্রে খামারিরা সরকারের কাছে বিনামূল্যে উন্নতমানের ঘাসের বীজের সরবরাহ চান, যাতে করে বিকল্প খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'দেশে গাভীর উৎপাদনশীলতা কম। আমাদের দেশে প্রতিটি গাভি দৈনিক গড় দুধ দেয় ৮-১০ লিটার, যেখানে শীতপ্রধান দেশে এর পরিমাণ ২২-৩০ লিটার। এক্ষেত্রে জাত উন্নয়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো জরুরি। এরপরও যে পরিমাণ দুধ উৎপাদন হচ্ছে সেটারও সমন্বিত বিপণন ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। এ বিষয়ের উন্নয়নে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে কিনোট পেপারে।
এফএলজেএফের সভাপতি মুন্না রায়হানের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।