টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা ইমরুলের
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই ইমরুল কায়েসের। যা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত সেই আক্ষেপ নিয়েই টেস্ট ও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিলেন ইমরুল। আগামী ১৬ নভেম্বর লাল বলের ক্রিকেট থেকে বিদায় নেবেন তিনি।
নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক ভিডিওতে এই ঘোষণা দিয়েছেন ইমরুল। ভিডিও পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, 'বিদায় টেস্ট ক্রিকেট। আপনাদের ভালোবাসার জন্য কৃতজ্ঞ।' এর নিচে লেখা, 'টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করছি, সব সময় ভালোবাসা ও সমর্থন দেওয়ার জন্য আমার সব ভক্তদের ধন্যবাদ।'
জাতীয় দলের হয়ে ইমরুলের খেলা টেস্ট ম্যাচ ও প্রথম শ্রেণির ম্যাচের মুহূর্তে তার পোস্ট করা ভিডিওর শুরুর অংশে দেখানো হয়। এই ভিডিওতে তিনি বলেছেন, 'আস-সালামু আলাইকুম, আমি ইমরুল কায়েস। আমি বাংলাদেশের সকল ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রেখে একটি বিষয়ে জানাতে চাচ্ছি। আমি খুব শিগগিরই আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।
মিরপুর স্টেডিয়ামের টানেল, গ্যালারি, মাঠ ও ড্রেসিংরুমে করা ভিডিওতে ইমরুল আরও বলেন, 'আমি আগামী ১৬ নভেম্বর আমি আমার টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। এবং সেই সাথে আমি আমার প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেরও সমাপ্তি ঘোষণা করতে যাচ্ছি। এটি আমার জীবনের ১৭ বছরে (ক্যারিয়ার) সবচেয়ে কঠিন এবং আবেগের একটি মুহূর্ত।' ভিডিওর শেষ অংশে জানানো হয়, 'পুরো গল্প শিগগিরই আসছে।'
২০০৮ সালে ব্লুমফন্টেইনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় ইমরুলের। এরপর থেকে জাতীয় দলের হয়ে ৩৯টি টেস্ট খেলেছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। ৩টি সেঞ্চুরি ও ৪টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২৪.২৮ গড়ে ইমরুলের রান ১ হাজার ৭৯৭, যা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দশম। সর্বশেষ ২০১৯ সালে টেস্ট খেলেন তিনি, বাংলাদেশের হয়ে তার খেলা সর্বশেষ ম্যাচও ওটাই।
টেস্টে প্রথম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটিতে নাম আছে ইমরুলের। ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে তামিম ইকবালের সঙ্গে ৩১২ রান যোগ করেন তিনি, যেখানে তার অবদান ছিল ১৫০। যা ইমরুলের টেস্ট ক্যারিয়ার সেরা। দ্বিতীয় উইকেটেও সর্বোচ্চ রানের জুটিতে আছে তার। ২০১৪ সালে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় উইকেটে ২৩২ রানের জুটি গড়েন ইমরুল ও শামসুর রহমান শুভ। এই জুটিতে তার অবদান ছিল ১০২ রান।
প্রথম শ্রেণিতে ইমরুলের পথচলা শুরু ২০০৭ সালে। ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে খুলনা বিভাগের হয়ে অভিষেক হয় তার। ১৩৭টি প্রথম শ্রেণির (টেস্টসহ) ম্যাচে ২০টি সেঞ্চুরি ও ২৭টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৩.৭৪ গড়ে ৭ হাজার ৯৩০ রান করেছেন ইমরুল। ঘরোয়া ক্রিকেটের এই সংস্করণ ও টেস্ট থেকে বিদায় নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা এই ব্যাটসম্যান এখনও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেননি।