গণঅভ্যুত্থানের ১০০ দিন: আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে নাগরিক সমাবেশ, শহীদদের কবর জিয়ারত
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শততম দিনে আওয়ামী লীগের বিচার দাবিতে নাগরিক সমাবেশ করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। এছাড়া দেশব্যাপী আহত ও শহীদ পরিবারের খোঁজখবর ও কবর জিয়ারত কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ শুক্রবার রাজধানীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ থেকে জুলাই গণহত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের বিচার এবং শহীদ পরিবার ও আহতদের পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যারা আওয়ামী লীগের দোসর ব্যবসায়ী, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের আশ্রয় দেওয়ার চেষ্টা করছেন, আপনারা এ থেকে বের হয়ে আসুন। নয়তো আপনাদের রাজনৈতিক যন্ত্র-কলাকৌশল ছাত্ররা দখল করে নেবে।
তিনি বলেন, আহতদের নিয়ে অনেক দল রাজনীতি করছে। আপনারা টাকার বিনিময়ে রক্ত বিক্রি করে দেবেন না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধাদের নিয়ে একদল নকল সার্টিফিকেট বানিয়ে আসল মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। ২৪ এর বিপ্লবে আমরা এটা হতে দেব না।
নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, 'উপদেষ্টাদের নিয়ে সম্প্রতি জনগণ প্রশ্ন তুলেছে। উপদেষ্টাদের কাছ থেকে নগরিক কমিটি এ বিষয়ে স্পষ্ট বিবৃতি চায়। রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় এখনো আওয়ামী লীগের দোসর, যাদের হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে, তারা রয়ে গেছে। তাদের বিতাড়িত করুন, নয়তো ছাত্র-জনতার আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে, যেখানে আগামীর রাষ্ট্র ছাত্ররা চালাবে এবং জনগণ যে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু সেটা দেখাতে বাধ্য হব।'
নাগরিক কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম বলেন, 'আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে এ গণহত্যা চালিয়েছিল। ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, ছাত্রদের আন্দোলন দমিয়ে রাখতে ছাত্রলীগই যথেষ্ট। যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য, তাদের দলীয়ভাবে গণহত্যায় ব্যবহার করেছে আওয়ামী লীগ।
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য মশিউর রহমান প্রশ্ন রাখেন, বাকশালের মূলনীতি আর সংবিধানের মূলনীতি এক। সেই সংবিধান দিয়ে কি রাষ্ট্র চলবে?
এদিকে রায়েরবাজার কবরস্থানে গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের গণকবর জিয়ারত ও পরিদর্শনে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা।
সেখানে সংগঠনটির মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, এখনও অনেক পরিবার তাদের হারানো স্বজনদের খুঁজে পায়নি। যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, তা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। গণকবর শনাক্তে সরকারের পক্ষ থেকে পরিষ্কার কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় ডিএনএ টেস্টসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অজ্ঞাতদের পরিচয় শনাক্ত করে তালিকা তৈরি করতে হবে।