ট্রাম্পের জয়ের পর ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা স্থগিত ইরানের: নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয়ের পর ইরান এখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে। এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের এক সদস্যসহ দেশটির সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ পাঁচ কর্মকর্তার দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনা স্থগিত করেছে ইরান। কারণ, তারা নতুন মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে উত্তেজনা বা দ্বন্দ্ব বাড়াতে চান না।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে ট্রাম্প যে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন, তা ইরানকে আকৃষ্ট করেছে বলেও জানান তারা।
লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সুবিধা করতে না পারা, অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক সংকটসহ বেশ কিছু বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরানের সুসম্পর্ক তৈরির সিদ্ধান্তের আরেকটি কারণ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইরানি এক কর্মকর্তা বলেন, একসঙ্গে এতগুলো চ্যালেঞ্জ ইরানকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর আগে কিছু মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্পকে গুপ্তহত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ইরান জো বাইডেনের প্রশাসনকে স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে ট্রাম্পকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
গত বুধবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘছি বলেছেন, ইরান হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানায়। তিনি আরও বলেন, যদিও তেহরান এখনও গত মাসে ইসরায়েলের বিমান হামলাগুলোর জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে, তবে তারা লেবাননে যুদ্ধবিরতির মতো আঞ্চলিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে।
মার্কিন নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন পরে, জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত, আমির সাইদ ইরাভানি, ট্রাম্পের কান আছে এমন বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা এলন মাস্কের সাথে নিউইয়র্কে রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে আগত ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা করেছিলেন। ইরানের দুই কর্মকর্তা বৈঠককে আশাব্যঞ্জক বলে বর্ণনা করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের কয়েকদিন পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি নিউইয়র্কে তার বাসভবনে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইলন মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তারা আসন্ন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেন। ইরানের দুই কর্মকর্তা এ বৈঠককে আশাব্যঞ্জক বলে অভিহিত করেছেন।
ইরানে সংস্কারপন্থী ও মধ্যপন্থী দলগুলো এ খবরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও রক্ষণশীলরা এর তীব্র সমালোচনা করেন এবং রাষ্ট্রদূতকে বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যায়িত করেন।
উল্লেখ্য, আগেরবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্প ২০১৮ সালে পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও ২০২০ সালে ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জেনারেল কাসিম সুলাইমানিকে হত্যার আদেশ দিয়েছিলেন।
অনুবাদ: রেদওয়ানুল হক