লুটপাটের টাকা ফেরত আনতে এফবিআইসহ অনেকের সঙ্গে বৈঠক হবে: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
গত ১৫ বছরে লুটপাট হওয়া টাকার কথা উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এফবিআই) সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সমসাময়িক বিষয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রেস সচিব বলেন, 'লুটপাট করে যে টাকা দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে, সেই টাকা ফেরত আনার চেষ্টা করা হবে সরকারের অন্যতম একটি অঙ্গীকার। সেই লক্ষ্যে আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাসহ (এফবিআই) এ বিষয়ে যেসব আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান কাজ করে, তাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।
ক্ষমতা হারানোর কিছুদিন আগেও শেখ হাসিনা সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, মূলত এস আলমকে টাকা পাচারের সুযোগ করে দিতেই এ টাকা ছাপানো হয়েছিল।
দেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি আজ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই বিষয়টি জানাতেই এ সংবাদ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে প্রেস উইং।
শফিকুল আলম বলেন, 'উন্নয়নের বয়ানের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে অর্থনৈতিক শ্বেতপত্রে। এর মাধ্যমে যে চিত্র বেরিয়ে এসেছে, তা ভয়াবহ। চোখের সামনে একটা বিশাল লুটপাট হয়েছে, লুটপাটতন্ত্র জারি হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের অনেকেই এর বৈধতাও দিয়েছেন।...খুব যে বেশি লোক তা নয়, রাজনীতিবিদ ছিলেন, আমলা ছিলেন, কিছু অলিগার্ক ব্যবসায়ী ছিলেন। যোগসাজশে এটি করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন লুটপাটের এমনই চিত্র, এটি পাঠ্যবইয়ে আসা উচিত। কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে জানা উচিত গত ১৫ বছরে কীভাবে লুটপাট চলেছে।
নতুন করে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপানোর পরও মূল্যস্ফীতিতে এর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, 'যে সাড়ে ২২ হাজার কোটি টাকা ছাপানো হয়েছে, তা চৌবাচ্চার পানির মতো। মূল্যস্ফীতিতে এর সামান্যতম প্রভাবও পড়বে না।'
গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, নতুন করে ২২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ৬টি ব্যাংককে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদন নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, 'এটি তিন মাসের একটি রিপোর্ট। এ পর্যন্ত যে ডেটা পাওয়া গেছে, সে অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। এটা আরও আপডেট হবে। কীভাবে দেশের টাকা লুটপাট হয়েছে তার পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরতে হবে।'
দেশের অর্থ চুরির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত ছিলেন প্রত্যেকের বিচার হবে বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, 'চুরির অবশ্যই বিচার হবে। কেউ ছাড় পাবে না।'
আগামীকাল সোমবার কমিশন এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে বলে জানান তিনি। সেখানে প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।