আপিলে হেরে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধের পথে 'টিকটক'
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের কার্যক্রম নিষিদ্ধ বা বিক্রির নির্দেশনা চ্যালেঞ্জ করে করা আবেদন ফেডারেল আদালত বাতিল করে দিয়েছেন। খবর বিবিসি'র।
টিকটক যুক্তি দিয়েছিল যে, এই আইন অসাংবিধানিক, কারণ এটি তাদের ১৭ কোটি মার্কিন ব্যবহারকারীর মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর 'অভূতপূর্ব আঘাত' হানছে। তবে আদালত আইনটিকে বৈধ বলে রায় দিয়েছেন এবং বলেছেন, 'এই আইন দীর্ঘমেয়াদী, দ্বিদলীয় পদক্ষেপ এবং পরপর কয়েকজন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের পরিপূর্ণ ফলাফল।'
রায়ের পর টিকটক জানিয়েছে, তারা এই মামলাটি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালতে নিয়ে যাবে। এক বিবৃতিতে টিকটকের মুখপাত্র বলেছেন, 'সুপ্রিম কোর্ট আমেরিকানদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা আশা করি, তারা এই সাংবিধানিক বিষয়টিতে আমাদের পক্ষে রায় দেবে।'
মুখপাত্র আরও জানান যে, আইনটি 'ভুল তথ্য ও কাল্পনিক আশঙ্কার' ভিত্তিতে তৈরি এবং এটি আমেরিকান নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা হরণ করবে।
মূলত চীনা সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে দাবি করে টিকটককে নিষিদ্ধ বা বিক্রি করাতে চায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। তবে টিকটক ও এর মূল প্রতিষ্ঠান বাইটডান্স এই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, 'আইনটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে এটি কেবলমাত্র বিদেশি প্রতিপক্ষের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হয়। এটি চীনের (পিপলস রিপাবলিক অব চায়না) দ্বারা প্রমাণিত জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির মোকাবিলার একটি বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ।'
তবে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় টিকটকের জন্য একটি সম্ভাব্য আশার আলো হতে পারে।
২০২০ সালে তার প্রথম মেয়াদে টিকটক নিষিদ্ধ করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলেও, তিনি সাম্প্রতিক নির্বাচনের প্রচারে জানিয়েছিলেন যে, এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে দেবেন না।
আইন অনুযায়ী, টিকটককে ২০২৫ সালের শুরুতে নিষিদ্ধ বা বিক্রি করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের একদিন আগে শেষ হবে। তবে, তিনি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন কিনা, তা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেমস গ্রিমেলম্যান বলেছেন, 'টিকটকের জন্য ছাড় দেওয়া ট্রাম্পের জন্য সহজ হবে না। মার্কিন কংগ্রেসে চীনবিরোধী মনোভাব খুবই শক্তিশালী, এবং উভয় দলের মধ্যেই টিকটক নিষিদ্ধ করার পক্ষে শক্তিশালী সমর্থন রয়েছে।'