রিফাত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগপত্রের শুনানি অনিশ্চিত
বরগুনায় বাইশ বছরের তরুণ রিফাতকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগপত্রের শুনানির জন্য ১৮ সেপ্টেম্বর তারিখ ধার্য রয়েছে। জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে শুনানিটি অনুষ্ঠিত হবার কথা।
অন্যদিকে, জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এ মামলার শিশু-কিশোরদের নিয়ে গঠিত অভিযোগপত্রেরও একটি শুনানি ১৮ সেপ্টেম্বরেই হবার কথা। ওই অভিযোগপত্রের নয় নম্বর অভিযুক্ত মোহাম্মদ নাজমুল হাসানের জামিনের শুনানির ধার্য তারিখও ১৮ সেপ্টেম্বর। একই দিনে দুটি শুনানি পড়ায় মামলার মূল অভিযোগপেত্রর শুনানি অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।
১ সেপ্টেম্বর রিফাত হত্যাকাণ্ডে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর, ৩ সেপ্টেম্বর এ মামলার ধার্য তারিখ ছিল। কিন্তু জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আরিয়ান শ্রবণ নামের এ মামলার এক অভিযুক্তের জামিনের শুনানি ছিল সেদিনই। সেজন্য মামলার মূল নথি ওই আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ফলে ৩ সেপ্টেম্বরও অভিযোগপত্রের শুনানি সম্ভব হয়নি। তাই অভিযোগপত্রের শুনানির জন্য নতুন তারিখ দেওয়া হয় ১৮ সেপ্টেম্বর।
এখন দেখা যাচ্ছে, এই তারিখেও শুনানি সম্ভব কি না তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হযেছে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বাদীপক্ষের মনোনীত আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুল হক কিসলু বলেন, “এ মামলার অভিযোগপত্রের শুনানির তারিখ পূর্বনির্ধারিত থাকলেও শুনানি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ অন্যতম অভিযুক্ত, চৌদ্দ বছরের কিশোর নাজমুল হাসানের জামিনের শুনানি রয়েছে জেলা দায়রা ও জজ আদালতে। মামলার মূল নথি সেখানেই নেওয়া হয়েছে। মূল নথি ছাড়া অভিযোগপত্রের শুনানি হওয়ার সুযোগ নেই।”
এদিকে, ২৬ জুন বরগুনা সদর হাসপাতালে আহত রিফাতকে রিকশায় চড়ে মিন্নির নিয়ে আসার নতুন ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতাল প্রাঙ্গনে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সিসি ক্যামেরা দুটোই চালু ছিল। কোন ক্যামেরায় ঘটনাটি ধারণকৃত হয়েছিল, তা প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি।
এ বিষয়ে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ সোহবাফ উদ্দীন বলেন, “হাসপাতাল প্রাঙ্গনে বরগুনা জেনরেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বরগুনা জেলা পুলিশের সিসি ক্যামেরা রয়েছে। এছাড়া এখানে অন্য কারও সিসি ক্যামেরা নেই।”
তবে, তিনি মনে করছেন, হাসপাতাল প্রাঙ্গনে রিফাত শরীফ ও মিন্নির যে ভিডিওটি গত পরশু প্রকাশিত হয়েছে, সেটি তাদের ক্যামেরায় রেকর্ডকৃত নয়। ওই ভিডিও যেভাবে বা যে জায়গা থেকে রেকর্ড করা হয়েছে সেখানে বা তার ধারেকাছে হাসপাতালের কোনো ক্যামেরা স্থাপন করা হয়নি বলে জানান তিনি।
হাসপাতাল প্রাঙ্গনে মিন্নি ও রিফাতের ওই ভিডিওটি কোন ক্যামেরায় ধারণকৃত সে বিষয়ে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদ এখনও তাদের অনিশ্চিতির কথা জানান। তবে, তারা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছেন সেটাও বললেন তিনি।