ভারী দেখে ভেবেছিলেন বাঘাইড় মাছ, জালে উঠে এল ১০ ফুট লম্বা কুমির
কুষ্টিয়ার পদ্মা নদীতে মাছ ধরছিলেন জেলে শরীফুল ইসলাম। জাল তোলার সময় বেশ ভারী ঠেকছিল। তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, বিশাল দাঁও মেরেছেন। কিন্তু মাছের বদলে তার জালে উঠে এল আস্ত এক কুমির। তাও একেবারে দশাসই চেহারার।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে প্রায় ১০ ফুট লম্বা কুমিরটি ধরেন শরীফুল। বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মিঠাপানির কুমির হওয়ায় পদ্মা নদীর গভীরে এটি অবমুক্ত করা হবে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপি বিকাশ চন্দ্র বলেন, কুমিরটি প্রায় ১০ ফুটের বেশি লম্বা এবং তিন ফুটের বেশি চওড়া। এটি বর্তমানে আমাদের হেফাজতে আছে।
'যেহেতু কুমিরটির আবাস পদ্মা নদীতে, তাই রাতে এটি নদীর গভীরে অবমুক্ত করা হবে,' জানান তিনি।
মিরপুর উপজেলার তালবাড়িয়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া বালি ঘাট এলাকায় পদ্মা নদীতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে অন্য জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
জেলে শরীফুল ইসলাম বলেন, 'প্রতিদিনের মতো সকালে পদ্মা নদীতে মাছ ধরার জন্য কটের জাল ফেলি। কিছুক্ষণ পর জাল তোলার সময় অনেক ভারী মনে হচ্ছিল।'
'তখন বড় বাঘাইড় মাছ মনে করেছিলাম, কিন্তু জাল কাছে আসার পর দেখি এটি কুমির।' প্রথমে ভয় পেলেও কৌশলে ৭–৮ জন মিলে জাল টেনে কুমিরটিকে নদীর পাড়ে নিয়ে আসেন শরীফুল।
আরেক জেলে রিপন বলেন, 'একটি কুমিরকে মাঝেমধ্যেই পাড়ে দেখা যেত। এ নিয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কে ছিলেন।'
কুমিরটি তোলার সময় তাদের জাল ছিঁড়ে গেছে বলে জানান এ জেলে। 'এতে আমরা অনেক টাকার ক্ষতির শিকার হয়েছি। বন বিভাগের কাছে আমরা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি।'
বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশন (বিবিসিএফ)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শাহাবউদ্দিন মিলন বলেন, 'বেলা ১টার দিকে জেলেদের কাছ থেকে কুমিরটির বিষয়ে জানতে পেরে বন বিভাগকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরে বন বিভাগ কুমিরটিকে তাদের হেফাজতে নেয়।'
'কুমিরটি দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় জমায়। তবে কুমিরটি শান্ত স্বভাবের এবং আক্রমণাত্মক নয়। কারণ ধরা পড়ার পর থেকেই এটি চুপচাপ ছিল,' বলেন তিনি।