আশুলিয়ায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক
ঢাকার আশুলিয়ায় প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে জলকামান ব্যবহার করে বিক্ষোভরত শ্রমিকদের সরিয়ে দেয় পুলিশ।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'সড়ক থেকে সড়ে যেতে পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের অনুরোধ করা হলেও শ্রমিকরা তাতে সাড়া না দেওয়ায় বাধ্য হয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে জলকামান ব্যবহার করে শ্রমিকদের সড়িয়ে দেওয়া হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'শ্রমিকদের সড়ক থেকে সড়িয়ে দেওয়ার পর সড়কটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এছাড়াও সমস্যা সমাধানে বিজিএমইএসহ সব পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে, আশা করছি খুব শিগগিরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে।'
এর আগে সকাল ১০ টা থেকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে শারমীন গ্রুপের চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা।
শিল্প পুলিশের একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার টিবিএসকে বলেন, 'সম্প্রতি মালিকপক্ষের ছেলের বিয়ে উপলক্ষে কারখানায় শ্রমিকদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনকে কেন্দ্র করে কারখানার অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মালিকপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৩ ধারায় বেশ কিছু শ্রমিককে প্রথমে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় এবং পরবর্তীতে তদন্ত করে মালিকপক্ষ যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমান পেয়েছে তাদের চাকুরীচ্যুত করে। চাকুরীচ্যুত করা এমন শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪৩০ জন।'
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, 'মূলত চাকরিচ্যুত এসব শ্রমিকরা শ্রম আইনের ২৬ ধারায় সকল সুবিধাসহ তাদের চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়ে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে।'
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু টিবিএসকে বলেন, 'সম্প্রতি হামীম গ্রুপের মালিকের ছেলের বিয়ে উপলক্ষে মালিকপক্ষ সকল শ্রমিকদের দাওয়াত দিয়ে ভোজের আয়োজন করে। খাওয়া-দাওয়ায় অংশ নেওয়া একটি অংশের, বিশেষ করে শারমীন গ্রুপের শ্রমিকদের অভিযোগ দাওয়াত দিয়ে হামীমের শ্রমিকদের ভালোভাবে আপ্যায়ন করলেও শারমীনের শ্রমিকদের আপ্যায়নে ত্রুটি ছিল। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে কারখানার ভিতরে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়, ভাঙচুরের অভিযোগও শোনা গেছে। এরপর থেকে শ্রমিকরা কারখানায় কাজও বন্ধ রেখেছিল।'
বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৩ ধারা ও ২৬ ধারার পার্থক্য উল্লেখ করে এই শ্রমিক নেতা বলেন, '২৩ ধারায় যদি শ্রমিকদের বরখাস্ত করা হয় এবং তদন্তে অপরাধ প্রমাণের পর কোনো শ্রমিকের চাকরি যায় তবে সে বেতন ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা পাবেন না। কারণ অপরাধমূলক কাজের জন্য তার চাকরি গেছে। আর ২৬ ধারায় কোনো শ্রমিকের চাকরির অবসান করা হলে তিনি আইনের অধিনে যাবতীয় বেনিফিট পান।'