নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার পর এবার নেতানিয়াহুর মন্ত্রিসভায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন
ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার পর এবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের মন্ত্রিসভা গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করেছে।
দীর্ঘ ৪৬০ দিনেরও বেশি সময় পর অবশেষে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছল ইসরায়েল।
নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৬ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠকের পর স্থানীয় সময় শনিবার সকালে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করে।
এতে বলা হয়েছে, 'সরকার জিম্মিদের প্রত্যাবর্তনের চুক্তি (ফ্রেমওয়ার্ক) অনুমোদন করেছে। জিম্মিদের মুক্তির কাঠামো রোববার থেকে কার্যকর হবে।'
ইসরায়েলি মন্ত্রিসভার কিছু কট্টরপন্থী নেতা এ চুক্তির তীব্র বিরোধিতা করলেও, নেতানিয়াহুর জোট সরকারের ২৪ জন মন্ত্রী চুক্তির পক্ষে ভোট দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, চুক্তির বিরোধীতা করেছেন ৮ জন।
এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অনুমোদন দেয়।
কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো বুধবার ইসরায়েল ও হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেওয়ার দুইদিন পর গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়, 'রাজনৈতিক, নিরাপত্তা এবং মানবিক দিকগুলো পর্যালোচনা করার পর এবং যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জনে চুক্তিটি সহায়ক হবে বলে নিশ্চিত হওয়ার পরই এটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।'
বুধবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিশর ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেয়।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চুক্তিটি ৩ ধাপে কার্যকর হবে। এরমধ্যে প্রথম ধাপ ৬ সপ্তাহে। এই সময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে গাজায় বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ চুক্তির প্রথম ধাপে ৭৩৭ ফিলিস্তিনি বন্দির হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করেছে। রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৪টার পর তাদেরকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে।
টাইমস অফ ইসরায়েলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হালনাগাদ তালিকায় হামাস, ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ক্ষমতাসীন ফাতাহ মুভমেন্টের বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছেন— যারা এই মুহূর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
এদিকে আল জাজিরার প্রতিবেদন জানিয়েছে, এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৪৬,৭৮৮ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১,১০,৪৫৩ জন আহত হয়েছেন।