হাসিনার আমলে মেগা প্রকল্পে প্রাথমিক বাজেটের চেয়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বেশি কেন লেগেছে? ৮ কারণ উল্লেখ টাস্ক ফোর্সের
বাংলাদেশে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির আটটি কারণ খুঁজে পেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত টাস্ক ফোর্স।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ টাস্ক ফোর্সের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করেন।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যয় ও সময় বাড়ানোর উদাহরণ হিসেবে পদ্মা সেতু এবং ঢাকা-মানিকগঞ্জ এক্সপ্রেসওয়ে (ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে) সহ আটটি মেগা প্রকল্পের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
বাকি ছয়টি মেগা প্রকল্প হলো- পদ্মা সেতু রেল সংযোগ, যমুনা রেল সেতু, কর্ণফুলী টানেল, এমআরটি লাইন-৬, বিআরটি-৩ এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টাস্কফোর্সের তালিকাভুক্ত আটটি মেগা প্রকল্পের প্রাথমিক বাজেট ছিল ১১ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু দুর্নীতি ও অন্যান্য অনিয়মের কারণে তা বেড়ে ১৮ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
এতে বলা হয়, মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম সময়ে বাস্তবায়িত হয়েছিল ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, যার বাস্তবায়ন সময় ছিল পাঁচ বছর। অন্যদিকে, পদ্মা সেতু প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছে ১৩ বছর, যা ছিল দীর্ঘতম সময়সীমা।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে এত বিপুল ব্যয় ও সময় লাগার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে টাস্ক ফোর্স প্রতিবেদনে আটটি কারণ উল্লেখ করেছে। এর মধ্যে দুর্বল ও ত্রুটিপূর্ণ সম্ভাব্যতা যাচাই এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে শৃঙ্খলাহীনতা অন্যতম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যয় ও সময় বৃদ্ধির পেছনে বাকি ছয়টি কারণ হলো- ভূমি অধিগ্রহণ, অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে বিরোধ, ক্রমিক পদ্ধতি, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক পরিবর্তন, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা ও প্রকল্প অর্থায়ন সমস্যা।
আরও বলা হয়, পরিবহন ব্যবস্থার অবনতি এবং ব্যয়বহুল, অসংলগ্ন অবকাঠামো উন্নয়ন দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যেহেতু সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে, শিপিং, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়—এসব মন্ত্রণালয়ই পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়নে জড়িত, এই বিভাজনের ফলে সমন্বয়ের অভাব ঘটে। এর যার ফলে বিরোধ, অদক্ষতা, খরচ বেড়ে যায়।
প্রতিবেদনে পরিকল্পনা কমিশনের কয়েকটি দুর্বলতারও উল্লেখ করেছে টাস্ক ফোর্স। যেমন: অভিজ্ঞতা এবং কৌশলগত পরিকল্পনার অভাব, এবং একটি জাতীয় প্রকল্প ড্যাশবোর্ডের অনুপস্থিতি।
চীন, ভিয়েতনাম ও জাপানের উদাহরণ টেনে টাস্ক ফোর্স বলেছে, সব সরকারি প্রকল্প মূল্যায়ন, অনুমোদন, সমন্বয় ও তদারকির ক্ষমতা থাকতে হবে পরিকল্পনা কমিশনের।