নিজের লিগ্যাল টিমের কাজকর্মে সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে আছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে নির্বাচনে পরাজয়ের শঙ্কা থেকে কারচুপির অভিযোগসহ ভোট পুনর্গণনার দাবি তুলেছেন রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই লক্ষ্যে তিনি সুপ্রিমকোর্টের দ্বারস্তও হয়েছেন।
তবে আইনি এই লড়াইয়ে নিজের লিগ্যাল টিমের কাজ কর্ম নিয়ে সন্তুষ্ট নন তিনি। ট্রাম্প মনে করছেন, ২০০০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী জর্জ ডব্লিউ বুশকে তার আইনজীবীরা যেভাবে সহায়তা করে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছিলেন, সেই পর্যায়ের সহায়তা তিনি নিজের লিগ্যাল টিমের পক্ষ থেকে পাচ্ছেন না।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ট এক ব্যক্তির বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন'র এক খবরে বলা হয়, নির্বাচনী ভোট গণনায় সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যতোই এগিয়ে যাচ্ছেন, ট্রাম্পের মনে ততোই প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে, কেনো তার আইনজীবীরা আরও সক্রিয় হচ্ছেন না। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন না তার আইনজীবীরা আদালতে তাকে যথেষ্ট আইনী সহায়তা করতে পারবে। সেকারণে আরও দক্ষ আইনজীবী খোঁজার পরামর্শও দেন তিনি।
জনগণের মুখোমুখি হওয়া সংক্রান্ত কাজকর্মে আইনজীবী রুডি গিউলানি এবং ফ্লোরিডার সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডির পরামর্শ নিতেন ট্রাম্প। তারা ট্রাম্পের যথেষ্ট আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত হলেও সাম্প্রতিক নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের কারণে তাদের ওপর প্রেসিডেন্টের বিশ্বাস অনেকটাই কমেছে বলে সিএনএন'কে জানান ওই ব্যক্তি।
চলমান নির্বাচনে পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া এবং মিশিগানে ভোট গণনা আইনগতভাবে কী উপায়ে ঠেকানো যায় তা দেখছেন জে সেল্কুসহ কয়েকজন রক্ষণশীল আইনজীবী। এই আইনজীবীরাই বছরের পর বছর ধরে ট্রাম্পকে নানা বিষয়ে আইনি পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
এসব বিষয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের সময় রিপাবলিকান দলের নির্বাচনী আইনজীবী বেঞ্জামিন গিনসবার্গ বলেন, কয়েকটি অঙ্গরাজ্য বাদ দিয়ে মাত্র একটি রাজ্যে ভোট পুনর্গণনার কী দরকার?
তিনি বলেন, "২০০০ সালের নির্বাচনে বুশ এবং গোরের মধ্যে লড়াই ছিলো একটি রাজ্যে। আমরা সেসময় ডাক দিয়েছি এবং শত শত আইনজীবীসহ অনেকেই ওই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিল।"
দোষারোপ ছড়াচ্ছে
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই একমাত্র ব্যক্তি নন যে তার লিগ্যাল টিমের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। হোয়াইট হাউসের শীর্ষস্থানীয় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, গত মঙ্গলবার নির্বাচনের দিনের আগে কেনো ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়ে তাদের সেরকম তোড়জোড় ছিল না।
আইনজীবীদের দোষারোপ করার এই বিষয়টি নানা দিক দিয়েই চলছে বলে জানানো হয় সিএনএন এর ওই প্রতিবেদনে।
সেখানে বলা হয়, ট্রাম্প নিজেই পরামর্শদাতাদের বলেছেন তার প্রচার প্রচারণা কর্মীদের উচিত ছিলো আরও দক্ষ আইনজীবীদের এক্ষেত্রে যুক্ত করা। তবে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন জ্যারেড কুশনারের বিরুদ্ধে, যিনি নিজের হোয়াইট হাউসের পদবীতে থেকেই নির্বাচন তদারকির দায়িত্বে ছিলেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, প্রচারণা টিমের দায়িত্বই হলো, নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে এমন আইনজীবীদের যথোপযুক্ত স্থানে নিয়োগ দেওয়া।
নির্বাচনী ফলাফলের বিষয়ে আরও আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউস পরামর্শদাতা প্যাট সিপলোন ট্রাম্পের কিছু প্রচার পরামর্শদাতাদের সাথে বৈঠক করেছেন।