বাংলাদেশি শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান দুবাইতে গ্রেফতার
বাংলাদেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের অন্যতম আলী আকবর চৌধুরী ওরফে জিসানকে গত সপ্তাহের শুরুতে দুবাইতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বাংলাদেশের পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) সহকারী পরিদর্শক মহিউর জানিয়েছেন, ইন্টাররপোলের সহযোগিতায় জিসানকে ধরা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ এখন তাকে দেশে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
বেশ ক’বছর ধরেই জিসানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশ চেষ্টা চালাচ্ছিল। ইন্টারপোলকে দরকারি কাগজপত্র পাঠানোর পর তারা এ-সংক্রান্ত রেড এলার্ট জারি করে। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান মহিউর।
গ্রেফতারের পর জিসানের হাতে দুটো পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। একটি ভারতীয়, যেখানে তার নাম আলী আকবর চৌধুরী। সেখানে উল্লেখ রয়েছে, তিনি আসামের শিলচরের মালুগড়ের বাসিন্দা। তার অন্য পাসপোর্টটি ডমিনিক রিপাবলিকের।
জিসানের ভারতীয় পাসপোর্টটি ইস্যু করা হয়েছে দুবাইয়ের ভারতীয় দূতাবাস থেকে। ভারতীয় পাসপোর্ট থাকায় জিসানকে প্রথমে ভারতে নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বাংলাদেশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ ইন্টারপোলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে যাতে জিসানকে ঝামেলা ছাড়াই দেশে নিয়ে আসা যায়।
১৯৯৯ সালের দিকে ঢাকার বাড্ডা, গুলশান ও খিলগাঁও অঞ্চলে অপরাধমূলক তৎপরতার মাধ্যমে জিসানের উত্থান ঘটে। ২০০৩ সালের ১৪ মে মালিবাগে জিসানের বাহিনীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় দুজন পুলিশ সদস্য নিহত হন। ২০০৭ সালে জিসান বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারত হয়ে দুবাই চলে যান।
সেখানে তিনি গাড়ি ও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা গড়ে তোলেন। তবে এখনও বাংলাদেশের অপরাধ জগতের উপর তার প্রভাব রয়ে গেছে। স্থানীয় অপরাধীদের কাছ থেকে তিনি অর্থ আদায় করতেন। জি কে শামীম, খালেদ ভুঁইয়া ও ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের মতো ক্যাসিনো-চক্রের হোতাদের অনেকের সঙ্গেই তার যোগাযোগ রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রের খবর, শামীম, খালেদ ও সম্রাট জিসানের সঙ্গে এ বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে দেখা করেন। তবে পরে শামীমের সঙ্গে জিসানের সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
২৬ জুলাই পুলিশ জিসানের তিনজন সহযোগীকে গ্রেফতার করে। খান মোহাম্মদ ফয়সাল, জিয়াউল আবেদিন জুয়েল ও জাহিদ আবেদিন রুবেল নামের এই তিনজনকে খিলগাঁও থেকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়।
পরে জানা যায় যে, এই তিনজন জিসানের নির্দেশে শামীমকে হত্যা করার মিশনে ছিলেন।