শীর্ষ বৈঠকে ৭টি সমঝোতা স্মারক সই, ৩ প্রকল্পের উদ্বোধন
নয়াদিল্লিতে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এছাড়া দু’নেতা যৌথভাবে তিনটি দ্বিপাক্ষিক যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
শনিবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে এগারোটায় নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে বৈঠকে বসেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। এরপর তাদের উপস্থিতিতেই চুক্তি সাক্ষরসহ চুক্তিপত্র বিনিময় হয়।
সাতটি সমঝোতা স্মারকের মধ্যে ছ’টি হল নতুন। বাকি একটি পুরনো চুক্তির নবায়ন।
স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের আওতায় উপকূলীয় এলাকায় নজরদারির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিনিময় করবে দু’দেশ।
এছাড়া চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য লেনদেনের একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ত্রিপুরার সাবরুম শহরের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য ভারত ফেনী নদী থেকে ১ দশমিক ৮২ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করতে পারবে। বাংলাদেশকে দেওয়া ভারতের প্রতিশ্রুত ঋণের প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে দু’দেশের মধ্যে চুক্তি হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউনিভার্সিটি অব হায়দ্রাবাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির নবায়ন নিয়ে সমঝোতা স্মারক হয়েছে। এছাড়া যুব উন্নয়নে সহযোগিতা নিয়েও হয়েছে আরেকটি সমঝোতা স্মারক।
চুক্তি ও সমঝোতাপত্র বিনিময়ের পর শেখ হাসিনা ও মোদী তিনটি দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারভিত্তিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন।
এগুলো হল, বাংলাদেশ থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি আমদানি প্রকল্প, ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে বিবেকানন্দ ভবন (ছাত্রদের হোটেল) নির্মাণ এবং ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স (আইডিইবি) ভবনে ‘বাংলাদেশ-ভারত প্রফেশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট’ স্থাপন।
প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা বলেন, “এসব বহুমুখী ও বহুমাত্রিক সহযোগিতার ফলে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশ্ববাসীর সামনে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।”
শীর্ষ বৈঠকের পর হায়দ্রাবাদ হাউজে শেখ হাসিনা তাঁর সম্মানে দেওয়া নরেন্দ্র মোদির মধ্যাহ্ন ভোজের আমন্ত্রণে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহষ্পতিবার সকালে নয়াদিল্লি পৌঁছেন। সেখানে তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের ইন্ডিয়ান ইকোনমিক সামিটে অংশ নেন।
নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতির পর তাঁকে স্বাগত জানিয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কটিতে ভারত সরকার ‘সর্বোচ্চ গুরুত্ব’ দেয়।
ভারতের পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শেখ হাসিনার দিল্লি পৌঁছানোর ছবি শেয়ার করে এক টুইট বার্তায় এ কথা জানায়। বার্তায় আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বের বাইরেও নানা বিষয়ে আদানপ্রদান করে।
হায়দ্রাবাদ হাউজে আজ দুপুরের শীর্ষ বৈঠকের পর বিকাল সাড়ে চারটায় ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করবেন শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি ভবনে এই সৌজন্য সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হবে।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফরকালীন আবাসস্থল হোটেল তাজমহলে এক অনুষ্ঠানে এশিয়াটিক সোসাইট তাঁকে ‘টেগোর পিস অ্যাওয়ার্ড’ দেবে।
প্রধানমন্ত্রী রোববার দেশে ফিরে আসবেন।