চিপ সঙ্কটে বিশ্বজুড়ে বিঘ্নিত হতে পারে মোবাইল, ল্যাপটপ ও অন্যান্য পণ্য উৎপাদন
স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, গাড়ি, টেলিভিশন এবং অন্যান্য হাজারো ইলেকট্রনিক্স পণ্য তৈরিতে চিপ আজকের দুনিয়ায় অতি-প্রয়োজনীয় এক অনুষঙ্গ। কিন্তু, পণ্য উৎপাদকেরা এখন চিপ সঙ্কটের কথা তুলে ধরে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এর ফলে অতিমারীর ধাক্কা কাটিয়ে ভোক্তা চাহিদা চাঙ্গা হওয়ার লক্ষ্মণ দেখা দিলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় উৎপাদনে দেরি হচ্ছে বলেও তারা জানিয়েছেন।
সমস্যাটির কারণ একাধিক। ইলেকট্রনিক্স শিল্প সংশ্লিষ্ট নির্বাহী এবং বিশ্লেষকরা জানান, চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট হুয়াওয়ে সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক চিপ সংগ্রহ করছে নানা উৎস থেকে। আবার জাপানের একটি বৃহৎ কারখানায় অগ্নিকান্ড, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় করোনাভাইরাস লকডাউনের প্রভাব এবং ফ্রান্সে ধর্মঘট পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়।
তার চাইতেও বড় কারণটি বেশ মৌলিক। ৮ ইঞ্চি সাইজের অধিকাংশ চিপ উৎপাদক কারখানা মালিক এশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। কিন্তু, তাদের কারখানায় উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ঘাটতি রয়েছে। আবার ৫ম প্রজন্মের ফোন, ল্যাপটপ আর গাড়ি তৈরিতে চিপের চাহিদা ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে বেড়েছে। পুঁজি লগ্নির ঘাটতি থাকায় তারা এই চাহিদার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারছে না।
শেনঝেন ভিত্তিক সোর্সিং কোম্পানি স্যান্ড অ্যান্ড ওয়েভের মুখ্য নির্বাহী ডনি ঝাং বলেন, 'সমগ্র ইলেকট্রনিক্স শিল্পেই আমরা প্রয়োজনীয় উপাদানটির সঙ্কটে ভুগছি।' বিশেষ করে স্মার্টফোন উৎপাদনে ব্যবহৃত মাইক্রো-কন্ট্রোলার পেতে বেশ দেরি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
'একমাসের মধ্যে আমরা উৎপাদন শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছিলাম। কিন্তু, এখন মনে হচ্ছে এই ব্যাচের উৎপাদন শেষ করতে মাস দুয়েক লেগে যাবে।'
জাপানের একটি ইলেকট্রনিক্স কম্পোনেন্ট সরবরাহক সংস্থার সূত্রও রয়টার্সকে ওয়াইফাই এবং ব্লুটুথ চিপের তীব্র সঙ্কট এবং বর্তমান ব্যাচ উৎপাদনে আরো ১০ সপ্তাহ বেশি সময় লাগবে বলে জানায়।
চীনের গাড়ি উৎপাদন শিল্প চলতি মাসের শুরুতেই এব্যাপারে জানিয়েছিল। একারণে আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির কার উৎপাদকেরা প্রভাবিত হবে বলে ওই সময় আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট শিল্পজোটের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
- সূত্র: রয়টার্স