‘ক্যারিবীয়দের এমন দল পাঠানো দুর্ভাগ্যজনক’
টেস্ট অধিনায়ক জেসন হোল্ডার আসছেন না বাংলাদেশ সফরে। নেই ওয়ানডের অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডও। দুই ফরম্যাটের অধিনায়কের মতো করোনাভীতির কারণ দেখিয়ে নাম সরিয়ে নিয়েছেন ড্যারেন ব্রাভো, শামার ব্রুকস, রস্টন চেস, শেলডন কটরেল, এভিন লুইস, শেই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরানরা। ব্যক্তিগত কারণে আসছেন না ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ও শেন ডরিচ।
বলা যায় 'দ্বিতীয় সারির' দল নিয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। নিয়মিত দলের ১২ জন ক্রিকেটারকে ছাড়াই দল গঠন করায় হতাশ বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার মিশনে 'দুর্বল' প্রতিপক্ষকে দেখে দুঃখই হয়েছে বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির বর্তমান নির্বাচক হাবিবুল বাশারের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন দল পাঠানোর ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলছেন তিনি।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে আলাপচারিতায় সাবেক এই অধিনায়ক বলেন, 'আমরা প্রমাণ করেছি যে আমাদের পরিস্থিতি ভালো। সফলতার সঙ্গে আমরা তিনটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছি। আমরা যে জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরি করেছি, সেটা বেশ সফল। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা যেমন, সেটা কিন্তু খেলতে না আসার মতো অবস্থা নয়। ব্যক্তিগতভাবে আমি এটা বিশ্বাস করি।'
করোনার কারণ দেখিয়ে এমন দল পাঠানোকে দুঃখজনক জানিয়ে হাবিবুল বাশার বলেন, 'আক্রান্তের দিক থেকে বাংলাদেশ অনেক ভালো অবস্থায় আছে। ওরা তো কোভিডের কারণই দেখাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে আমি বলব এটা দুঃখজনক। কারণ আমরা ভালো অবস্থায় আছি। এরপরও এমন দল পাঠানো দুর্ভাগ্যজনক। তারা কেমন দল পাঠাবে সেটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে তো আমরা কিছু বলতে পারি না। তবে আমি যেটা বলছি, ওরা যেহেতু কোভিডের কারণ দেখাচ্ছে, এটা দুঃখজনক।'
অন্যান্য দেশে গিয়ে খেললেও বাংলাদেশে না আসার কারণ ঠিক বুঝতে পারছেন না হাবিবুল বাশার, 'ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সবখানেই খেলা হচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ বেশ কয়েকটি সফর করলো। তারা নিউজিল্যান্ড সফর করে এলো। এরআগে ইংল্যান্ডে গিয়েছিল। তখন তো ইংল্যান্ডে খুবই বাজে অবস্থা ছিল। ইংল্যান্ড যে প্রটোকল অনুসরণ করেছে, আমরাও সেটা করেছি। আমাদের এখানে না আসার কারণ তো থাকার কথা নয়।'
প্রতিপক্ষ দুর্বল দল পাঠালেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নিবেদন একই রকম থাকবে বলে করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক, 'আপনি যখন দেশের হয়ে খেলবেন, তখন ইস্যুটা সম্পূর্ণ আলাদা থাকে। কার বিপক্ষে খেলছেন, সে শক্তিশালী নাকি দুর্বল; এসব ব্যাপার আসে না। কেউ যখন দেশের জন্য খেলে, সে তার সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করে। এখানে আর কোনও চিন্তাই কাজ করে না। সবাই নিজেদের জায়গা থেকে সেরাটাই খেলার চেষ্টা করে থাকে।'
হাবিবুল বাশার হতাশার কথা জানালেও বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক সেভাবে ভাবছেন না। মুমিনুলের মতে যারা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেন, তারা সবাই ভালো। তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যারা খেলে, তারা সবাই ভালো। ওরা যদি এক নম্বর দলও পাঠায়, আমি তো আমার প্রসেস অনুযায়ীই খেলব।'
আপাতত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরাটাকেই বড় করে দেখছেন মুমিনুল। যে কারণে প্রতিপক্ষের দল নিয়ে ভাবছেন না তিনি, 'অনেকদিন পর টেস্ট খেলব, এটা অনেক ভালো একটা সুযোগ আমাদের জন্য। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। আগেও ওদের পূর্ণ শক্তির দল এসেছিল, আমাদের কাছে হেরে গেছে। ওরা কী দল পাঠাচ্ছে এটা নিয়ে আমরা ভাবছি না। আমরা অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলব, সেটা আমাদের জন্য রোমাঞ্চকর। আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে শতভাগ চেষ্টা করব।'
দুটি টেস্ট ও তিনটি ওয়ানডে খেলতে আগামী ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৮ জানুয়ারি বিকেএসপিতে ৫০ ওভারের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ সফর শুরু হবে ক্যারিবীয়দের। এরপর ২০ ও ২২ জানুয়ারি মিরপুরে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে তারা। ২৩ জানুয়ারি চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবে দুই দল। একদিন বিরতি দিয়ে ২৫ জানুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
২৮ থেকে ৩১ জানুয়ারি এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে চার দিনের একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে উইন্ডিজ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি মিরপুর স্টেডিয়ামে শুরু হবে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি।