ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল খালাস প্রক্রিয়া শুরু
দেশের বাজারে মূল্য কমাতে শুল্কহার কমিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা চাল খালাস প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে।
৬২.৫ শতাংশ শুল্কহার থেকে ১৫ শতাংশ শুল্কহার করে গত শনিবার থেকে ভারত থেকে আমদানি করা হলেও সার্ভার আপডেট, শুল্কায়ন মূল্য ও আদেশে স্বাক্ষর জটিলতার কারণে গত তিন দিন ধরেই হিলি স্থলবন্দরে আটকে ছিল চাল।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে এই স্থলবন্দর দিয়ে ৩১টি ট্রাকে এক হাজার ২৬৯ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে। এসব চাল দেশের বাজারে প্রবেশ করলে দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশের বাজারে চালের ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায় কৃষকদের স্বার্থরক্ষার জন্য গত ৩ বছর আগে চাল আমদানির যে শুল্কহার ৬২.৫ শতাংশ করা হয়েছিল, তা কমিয়ে ১৫ শতাংশ করে সরকার। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শনিবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। তবে সরকারি চাল আমদানির শুল্ক কমালেও কাস্টমসের সার্ভারে তা আপলোড না করায় বিল অব অ্যান্ট্রি দাখিল করতে পারেননি আমদানিকারকরা।
অন্যদিকে, আমদানি করা চাল টনপ্রতি ৪১০ থেকে ৪২০ ডলারে শুল্কায়ন করতে চান কাস্টমস কর্মকর্তারা। কিন্তু অনেকেই এর কম মূল্যে চাল আমদানি করেছেন। এছাড়াও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশের কপিতে স্বাক্ষরজনিত সমস্যা পান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
এসব জটিলতায় আমদানিকৃত চাল খালাস করতে পারেননি আমদানিকারকরা। যার কারণে তাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সরকার চাল আমদানির জন্য শুল্কহার কমিয়ে দিলেও সেটি সার্ভারে আপডেট করা ছিল না। পরে সার্ভারে এই শুল্কহার আপডেট করা হলেও দেখা দেয় নতুন সংকট। চাল আমদানির জন্য গত ৭ জানুয়ারি যে এসআরও জারি করা হয়েছে, সেখানে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আইপি নিতে হয়। এই আইপি যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হওয়ার নিয়ম থাকলেও আমদানিকারকরা যে আদেশ নিয়ে এসেছেন, সেখানে সিনিয়র সহকারী সচিবের স্বাক্ষর রয়েছে। ফলে এটি এসআরওতে দেওয়া নির্দেশনা পূরণ করে না।
তাছাড়া, গত তিন মাসে চালের শুল্কায়ন মূল্যের রেফারেন্স রয়েছে ৪১০ থেকে ৪২০ মার্কিন ডলার। কিন্তু আমদানিকারকরা এর চেয়ে কম মূল্যে চাল আমদানি করছেন। তাই কত ডলার মূল্যে শুল্কায়ন হবে, সে বিষয়ে জটিলতা দেখা দেয়। পরে কাস্টমস থেকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হয়।
অবশেষে সোমবার রাতে সরকারের সহযোগিতায় এসব সংকটের সমাধান ঘটে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশিদ বলেন, 'দেশের বাজারে চালের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সরকার শুল্কহার কমিয়ে আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই অনুযায়ী আমদানিকারকরা চাল আমদানি শুরু করেছেন। কিছু জটিলতার জন্য চালগুলো বন্দরে আটকা ছিল, খালাস হচ্ছিল না। অবশেষে সরকারের সহযোগিতায় এসব চাল খালাস শুরু হয়েছে।'
খালাসের পর এসব চাল দেশের বাজারগুলোতে সরবরাহ করা হবে, তাতে দ্রুতই চালের মূল্য স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
হিলি স্থলবন্দর শুল্ক স্টেশনের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল আলম বলেন, 'কিছু আইনি জটিলতার কারণে আমদানিকৃত চাল ছাড় হয়নি। বিষয়গুলো সমাধান করে চাল খালাস শুরু হয়েছে।' আগামীতে যেসব চাল আমদানি করা হবে, সেগুলো খালাসের জন্য নতুন করে সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি।