মিরাজের ‘মিশন ওয়েস্ট ইন্ডিজ’
বাংলাদেশ দলে অভিষেকেই হইচই ফেলে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই টেস্ট সিরিজে ডানহাতি এই অফ স্পিনার হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের প্রধান বোলিং অস্ত্র। বল ছুড়লেই উইকেট জমা হচ্ছিল তার ঝুলিতে। স্বপ্নের অভিষেকের পরের তিন বছরও দারুণ কাটে মিরাজের। কিন্তু এই ধারায় স্থায়ী হতে পারেননি তিনি।
করোনাভাইরাসের প্রকোপের আগের কয়েকটি সিরিজে নির্বিষ থেকে গেছেন ২৩ বছর বয়সী এই তরুণ স্পিনার। বল হাতে নিজেকে মেলে ধরতে না পারায় বাদ পড়ার অভিজ্ঞতাও হয়েছে তার। এই খরা কাটিয়ে এবার চেনা ছন্দে ফিরতে চান মিরাজ। এই মিশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে লক্ষ্য বানিয়েছেন ডানহাতি এই অলরাউন্ডার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বলে একটু বাড়তি আত্মবিশ্বাস পাচ্ছেন মিরাজ। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বল হাতে পাওয়া সাফল্যই তাকে সাহস যোগাচ্ছে। টেস্ট এবং ওয়ানডে; দুই ফরম্যাটেই উইন্ডিজের বিপক্ষে দাপট দেখানোর সুখস্মতি আছে বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারের।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারটি টেস্ট খেলেছেন মিরাজ। সাত ইনিংসে ১৮.০০ গড়ে নিয়েছেন ২৪টি উইকেট। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেওয়া ডানহাতি এই স্পিনার পরের ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। ওয়ানডেতেও কার্যকরী বোলিং করেছেন মিরাজ, ১০ ম্যাচে তার শিকার ১২ উইকেট।
নিজেকে ফিরে পাওয়ার মিশনে নিজে থেকেই এই সুখস্মৃতি মনে করলেন মিরাজ। বুধবার জাতীয় দলের অনুশীলন শেষে তিনি বলেন, 'দেশের মাটিতে বা বাইরে শেষ তিন-চারটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমি অতটা ভালো করতে পারিনি। তবে আমি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে কয়টা ম্যাচ খেলেছি, আমার জন্য একটা আলাদা সুযোগ থাকবে।'
'ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাটিতে খেলা টেস্ট এবং ওয়ানডে; দুই ফরম্যাটেই আমি ভালো করেছি। আমার অবশ্যই ভালো অনুভূতি থাকবে যে, এখানে যদি ভালো করতে পারি, তাহলে নিজেকে ফেরানোর দারুণ একটা সুযোগ পাব। ভালো পারফরম্যান্স করার চেষ্টা থাকবে, দিনশেষে দলও যেন ভাল ফলাফল করে।'
করোনার বিরতির পর উইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। স্বস্তির এই খবরে সবার মতো মিরাজও উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, 'খুব ভালো লাগছে যে অনেকদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফিরছে। আমরা একটা পরিস্থিতি পার করেছি শেষ এক বছরে। হতাশ ছিলাম, কীভাবে কী করব না করব। সেভাবে অনুশীলন করতে পারছিলাম না। তারপরও চেষ্টা করছিলাম। এক বছর পর খেলা শুরু হচ্ছে, আমরা প্রত্যেকেই খুশি।'
এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছেন এক বছরের নিষেধাজ্ঞার শাস্তি ভোগ করা সাকিব আল হাসান। এ নিয়েও উচ্ছ্বাস আছে মিরাজের, 'অনেকদিন পর একসাথে হয়েছি এবং আমাদের সবাই অনেক উৎফুল্ল খেলার জন্য। সাকিব ভাইও দলে ফিরেছেন, উনি তো এক বছর দলের বাইরে ছিলেন। আমি মনে করি আমাদের দল খুব ভালো অবস্থায় আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমরা ভালো কিছু করতে পারব।'
তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশে এসেছে ক্যারিবীয়রা। আগামী ২০ ও ২২ জানুয়ারি মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দুই ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল। ৩ ফেব্রুয়ারি একই ভেন্যুতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি মিরপুর স্টেডিয়ামে শুরু হবে ১১ ফেব্রুয়ারি।