মিয়ানমারে ক্ষমতাচ্যুত সরকারি দলের আরও ৬ নেতা গ্রেপ্তার, মামলা করেছে এনএলডি
সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের সরকারি দল- এনএলডি'র আরও ৬ জন শীর্ষ নেতাকে নৈশ অভিযানে আটক করেছে জান্তা প্রশাসন। গত বুধবার রাতে সিরিজ অভিযানে এনএলডি'র এ নেতাদের আটক করা হয়। একইদিন, ইয়াঙ্গুনের বাহান টাউনশিপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তছনছ করা হয় এনএলডি'র সদর দপ্তর। এঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি।
গতকাল দিবাগত রাতের অভিযানে আটককৃতদের ভেতর সু চি'র ঘনিষ্ঠ এক সহকারী উ কাউ টিন্ত সোয়ে-ও আছেন। তিনি সু চি'র স্টেট কাউন্সিলর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
এছাড়া, এনএলডি'র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ড. মিয়ো অং অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়ে এক ভিডিও বার্তা দেওয়ার পরপরই রাত ১১টায় তাকে বাসবভন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্যান্যরা হলেন; মন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. আয়ে জান, রাখাইন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উ নি পু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য উ হুতুন হুতুন হেইন এবং দলের আইনি পরামর্শক উ কাও হো।
এনএলডি'র তথ্য কমিটি জানিয়েছে, সর্বশেষ এই গ্রেপ্তারের ঘটনায় তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সদস্য এবং শীর্ষ নেতারা এখন বন্দি হয়ে গেলেন।
দেশটিতে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভের মাঝেই এই নেতাদের আটক করা হলো। বিক্ষুদ্ধ জনতা সামরিক জান্তার পদত্যাগ ও সু চি'র মুক্তির দাবিতে দেশটির নানা শহর ও প্রদেশে সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে। শক্তিপ্রয়োগ করেও তা দমন করতে হিমশিম খাচ্ছে জান্তা সরকার।
এর আগে মঙ্গলবার মিয়ানমারের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর জলকামান ব্যবহারসহ তাজা গুলিও ছোড়ে। এতে সঙ্গেসঙ্গেই একজনের মৃত্যুর কথা জানা যায়।
এরপর, মঙ্গলবার রাতে চলে এনএলডি'র সদর দপ্তরে অভিযান। ওই সময় অবশ্য দলটির কোনো নেতাকর্মী সেখানে ছিলেন না, বলে জানানো হয় দলটির পক্ষ থেকে। অভিযানের সময় সদর দপ্তরে ভাঙচুর চালানোসহ সেখান থেকে বেশকিছু নথি ও কম্পিউটার হার্ডড্রাইভ জব্দ করা হয়।
এঘটনায় বাহান থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। এবং স্থানীয় পুলিশ মামলা গ্রহণের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এনএলডি নেতা উ সোয়ে উইন গণমাধ্যমকে জানান, সেনা সদস্যরা অভিযানের সময় দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এরপর তারা সিসিটিভি ক্যামেরাসহ, ভাঙচুর করে কম্পিউটার সার্ভারের যন্ত্রপাতি। তারা দলের চাঁদার রশিদ জব্দ করাসহ এবং সিন্দুক ভেঙ্গে দলীয় কোষাগারের অর্থ লুট করেছে।
উ সোয়ে উইন বলেন, 'আমরা এই ন্যাক্কারজনক বেআইনি ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। তার এনএলডি'র দোষত্রুটি ধরতে এই অভিযান চালিয়েছে।'
এনএলডি সূত্রমতে, সামরিক ও পুলিশের পোশাক পরিহিত ১৫ জন ব্যক্তি অভিযানে অংশ নেয়, তাদের মধ্যে কয়েকজন অবশ্য সাদা পোশাকেও ছিলেন।
এব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি বাহান থানা পুলিশ। তবে তারা বলেছে, বিষয়টি তারা তদন্ত করে দেখছে।
- সূত্র: দ্য ইরাবতী