রিফাত হত্যা মামলা: প্রধান আসামির স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন
বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক প্রধান আসামি রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজীর আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া এ মামলা অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিযুক্তদের বিচারের জন্য বরগুনার শিশু আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকালে মামলার ধার্য তারিখে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রিফাত ফরাজীর স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়।
কিন্তু এ মামলার মূল নথি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থাকায় স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের শুনানি হয়নি।মূল নথি সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পৌঁছালে স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের শুনানি হবে।
এ মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ৬ নভেম্বর ধার্য করেছেন বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী। একই সাথে শিশু অভিযুক্তদের মামলার পরবর্তী তারিখও নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ নভেম্বর।
এ বিষয়ে রিফাত হত্যা মামলার বাদী পক্ষের মনোনীত আইনজীবী মজিবুল হক কিসলু সাংবাদিকদের বলেন, রিফাত হত্যা মামলার সকল অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিরা আদালতের হেফাজতে রয়েছেন। তাই শিশু আসামিদের বিচারের জন্য মামলাটি শিশু আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রিফাত হত্যা মামলার আসামি কামরুল হাসান সাইমুনের আগামী ১১ নভেম্বর একটি পরীক্ষা আছে। এ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন সাইমুন। সাইমুনের পরীক্ষার এডমিট কার্ড আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত সাইমুনকে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দেবে বলেও জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফ নামের এক তরুণকে।
এ সময় বরগুনা সরকারি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রী আয়েশা সিদ্দিকা তাঁর স্বামীকে রক্ষার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালান। কিন্তু সন্ত্রাসীরা তাঁকে (রিফাত) উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
বেলা তিনটার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়। জনবহুল এলাকায় এমন নৃশংস হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভের ঝড় ওঠে।
পরে ২৭ জুন ১২ জনের নাম উল্লেখনকরে অজ্ঞাত আরো ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ।
এ মামলার প্রধান আসামী সাব্বির আহমেদ ওরফে নয়ন বন্ড গত ২ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
এ মামলার তদন্ত শেষে গত ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্তবয়স্ক ও অপ্রাপ্তবয়স্ক; দুই ভাগে বিভক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলশ। অভিযোগপত্রভূক্ত ২৪ আসামির মধ্যে ৮ জন বরগুনা জেলা কারাগারে এবং ১৩ জন যশোর শিশু ও কিশোর সংশোধনাগারে রয়েছেন। এছাড়া দুজন আসামী জামিনে রয়েছেন। আর এ মামলার প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মোঃ মুসা এখনো পলাতক রয়েছেন।