বক্সার থেকে গাঁজা ব্যবসায়ী, মাসে আয় সোয়া ৪ কোটি টাকা!
রিংয়ে উঠেই ঝড় তুলতেন, মুহূর্তেই প্রতিপক্ষের চেহারা পাল্টে দিতেন আমেরিকান কিংবদন্তি বক্সার মাইক টাইসন। অনেক লড়াই জেতা টাইসন রিংয়ের বাইরেও বাঁধনহারা। তার রিংয়ের বাইরের জীবনও ক্লাইম্যাক্সে ভরপুর। বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ, মাদকসহ নানা বিতর্কে জড়িয়েছে তার নাম। কিন্তু এতে থোড়াই কেয়ার টাইসনের। কখনও সমালোচনার দিকে ফিরে তাকাননি তিনি।
এখনও একই রকম আছেন টাইসন। তাই লোকে কী বলবে, সেটা নিয়ে না ভেবে গাঁজা চাষ শুরু করেছেন সাবেক এই বক্সার। গাঁজা চাষের কোম্পানি খুলেছেন তিনি, নাম দিয়েছেন 'টাইসন র্যাঞ্চ।' না, অবৈধ কিছুই করছেন না তিনি। টাইসনের গাঁজার ফার্ম যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে, আর এখানে গাঁজার ব্যবহার বৈধ।
টাইসন তার ফার্মটি গড়েছেন ১৬ হেক্টর জমির ওপর। এই ব্যবসা থেকে বিপুল আয় হচ্ছে টাইসনের, কোটি কোটি টাকা পকেটে পুড়ছেন তিনি। গাঁজা বেচে প্রতি মাসে ৫ লাখ ডলার আয় করছেন টাইসন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা সোয়া ৪ কোটি টাকারও বেশি। চিট শিট নামের এক ওয়েবসাইটের উদ্ধৃতি দিয়ে এমনই খবর প্রকাশ করেছে স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা।
অথচ দেউলিয়া হওয়ার যোগাড় হয়েছিল টাইসনের। ২০ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ারে তার আয় ছিল ৪৫৮ মিলিয়ন বা ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকারও বেশি। অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপনের কারণে এই বিপুল অর্থও ফুরিয়ে যায়, দেউলিয়া হওয়ার অবস্থা হয়ে গিয়েছিল। গাঁজা চাষের কোম্পানি খুলে রিংয়ের লড়াইয়ের মতো আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
গাঁজা ব্যবসায় সফল টাইসন কেবল ক্যালিফোর্নিয়াতেই তার ব্যবসা সীমাবদ্ধ রাখতে চান না। ব্যবসা আরও বড় করতে চাইছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগুয়া এন্ড বার্বুডাতে ব্যবসার কার্যক্রম চালু করতে ইতোমধ্যে সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছেন টাইসন। অনুমতি মিললে অ্যান্টিগুয়াতে গাঁজার চাষ শুরু করবেন তিনি।
গাঁজা চাষ করে বিক্রি করাই নয়, টাইসন নিজেও গাঁজা সেবন করেন। সাবেক এই বক্সারই এটা জানিয়েছেন। টাইসনের বিশ্বাস, গাঁজা সেবন তার স্নায়ুকে শান্ত রাখে। কিংবদন্তি এই বক্সার এরআগে বলেছিলেন, 'আমি ২০ বছর ধরে লড়াই করে আসছি, আমার শরীরে অনেক আঘাত আছে। আমার শরীরে দুটি অস্ত্রোপচার আছে, আমি আমার স্নায়ু শান্ত রাখতে গাঁজা সেবন করি। এটা সব ব্যথা দূর করে দেয়।'
তার গাঁজা সেবনের পরিমাণ অবাক করার মতো। টাইসনের ভাষ্যমতে, মাসে ৪০ হাজার ডলারের গাঁজা সেবন করেন তিনি এবং তার অতিথিরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। টাইসনের গাঁজায় রীতিমতো মুগ্ধ সাবেক এনএফএল খেলোয়াড় এবেন ব্রিটন। তিনি বলেছেন, 'আমরা মাসে ১০ টন গাঁজা সেবন করি।'
১৯৮৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত; ২০ বছর রিংয়ে দাঁপিয়ে বেড়িয়েছেন মাইক টাইসন। ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ বক্সার হিসেবে মাত্র ২০ বছর চার মাস ২২ দিন বয়সে হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। পেশাদার ক্যারিয়ারে মোট ৫৮টি লড়াই করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই বক্সার। এর মধ্যে ৫০টিতেই জিতেছেন টাইসন, হেরেছেন মাত্র ৬টিতে।