হ্রদ নয়, যেন মরুভূমির মাঝখানে শুয়ে আছে একজোড়া হৃদয়!
হাতের তালু আকৃতির বিখ্যাতসব দ্বীপ থেকে শুরু করে বুর্জ খলিফার মতো আকাশচুম্বী ভবন, কোনোটারই ঘাটতি নেই দুবাইয়ে। কিন্তু সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এই শহরের মরুভূমিতেও রয়েছে অনেক অদেখা সৌন্দর্য্য।
দুবাইয়ে মরুভূমির মাঝখানে অবস্থিত মানবসৃষ্ট একটি হ্রদ বর্তমানে প্রেমিক জুটিদের কাছে আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে। তার কারণ, 'লাভ লেক' নামে পরিচিত এই হ্রদ পুরোটাই হৃদয় আকৃতির। এর আশেপাশের সৌন্দর্য্যবর্ধক জিনিসগুলোও একইভাবে বানানো।
আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে, আল কাদরা মরুদ্যানে অবস্থিত দুটি হৃদয়াকৃতির হ্রদ এটি। ৫৫ লক্ষ বর্গমিটারজুড়ে বানানো এই বিশাল হ্রদ এমনকি মহাকাশ থেকেও দেখা যায়!
শহর থেকে বেশ দূরে, যতদূর চোখ যায়- বিস্তৃত মরুভূমির মাঝে এই লাভ লেক সত্যিকার অর্থেই একটি চমৎকার মরুদ্যান। হ্রদটি দেখলে আপনার মাথায় অবশ্যই যে চিন্তা খেলে যাবে, তা হচ্ছে, কী পরিমাণ সময়, শ্রম ও অর্থ এই সুসজ্জিত হ্রদের পেছনে ব্যয় করা হয়েছে।
হ্রদটি ছাড়াও এখানে রয়েছে হাজার রকমের গুল্ম-ঝোপঝাড়, ১৬ হাজার গাছ এবং অগণিত বর্ণিল ফুল। এসব ফুলের মধ্যে অন্যতম 'রেড বেগনিয়া' নামে রক্তলাল এক ধরনের ফুল, যা সগৌরবে ভালোবাসার প্রতীক হয়েই দাঁড়িয়ে রয়েছে।
২০১৮ সালে উন্মুক্ত হওয়া দুবাইয়ের এই লাভ লেক মানুষের নজর কাড়তে শুরু করে যখন দুবাইয়ের ক্রাউন প্রিন্স শেখ হামদান বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এর একটি অ্যারিয়েল ফটো আপলোড করেন; সঙ্গে ক্যাপশন ছিল 'আপনাদের সবার জন্য'!
যদিও মধ্যপ্রাচ্যে লাভ লেক একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে, কিন্তু এর আসল সৌন্দর্য্য বুঝতে হলে আপনাকে অন্তত ৫০ মিটার ওপর থেকে একে দেখতে হবে। তা না হলে আপনার মনে হতে পারে, এটি নিছকই একটি বাঁকানো হ্রদ।
আপনি হয়তো চাইবেন একবার হেলিকপ্টারে করে এটি দেখতে কিংবা উপর দিয়ে একটা ড্রোন উড়িয়ে নিয়ে আসল সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে, তবে তার জন্যেও আপনাকে অনুমতি নিতে হবে। আর এর কোনোটাই যদি সম্ভব না হয়, তাহলে গুগল তো রয়েছেই! গুগল আর্থে গিয়েই লাভ লেকের অসাধারণ সব ছবি আপনি দেখতে পাবেন।
মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখলে বোঝা যাবে না এখানে 'লাভ' ['LOVE'] শব্দটি লিখা হয়েছে শত শত গাছপালা দিয়ে। এমনকি ব্যাডমিন্টন কোর্ট পর্যন্ত এখানে হৃদয়াকৃতিতে সাজানো।
তাই আপনি যদি দুবাইয়ের বহুতল ভবন বা জাঁকজমকপূর্ণ শপিংমল কিংবা মানুষের তৈরি দ্বীপ দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে যান, তাহলে সোজা মরুভূমির ভেতরে ৫০ কিলোমিটার চলে যাবেন, সেখানেই দেখতে পাবেন সেই কাঙ্ক্ষিত অনন্য সৌন্দর্য্যের 'লাভ লেক'।
- সূত্র: অডিটি সেন্ট্রাল