ঘোড়দৌড়ে ৯৯ জনকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ১২ বছরের সোনিয়া!
সোনিয়ার বয়স মাত্র ১২ বছর। ক্লাস সিক্সের ছাত্রী। রুদ্ধশ্বাস ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ৯৯ জনকে পেছনে ফেলে অসাধারণ কৃতিত্ব গড়েছে সে। প্রথম পুরস্কার হিসেবে পেয়েছে একটি মোটরসাইকেল। তারপরেও ওই মোটরসাইকেলের মালিক হওয়া তার আকাশকুসুম কল্পনা।
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার শাইলগাছ ও গোগাউড়া গ্রামবাসীদের আয়োজিত এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় আড়াই মাইল দীর্ঘ কৃষি জমিতে সোনিয়ার ঘোড়াচালনা দেখে অনেকেই হতবাক। আসা-যাওয়া মিলিয়ে পাঁচ মাইল পথ পাড়ি দিতে হয়েছে সোনিয়াসহ সকল প্রতিযোগীকে।
চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তার নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা মাঠ। হাজার হাজার নর-নারী হাত উঁচিয়ে সোনিয়াকে জানান অভিবাদন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অপ্রতিরুদ্ধ ঘোড়া চালনা নিয়ে চলে প্রশংসা।
হবিগঞ্জসহ সাতক্ষীরা, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ১০০ জন প্রতিযোগী ঘোড়াদৌড়ে অংশ নেন। সবাইকে পেছনে ফেলে প্রথম হয় সোনিয়ার ঘোড়াটি।
শাইলগাছ গ্রামে দীর্ঘ মাঠে এ প্রতিযোগিতায় শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সোনিয়া ছিল অগ্রভাগে। সাংবাদিকদের সে জানায়, ছয় বছর বয়স থেকেই সে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখত। দেখে দেখেই মূলত শিখে যায় এই কঠিন খেলা। অবশ্য এ কাজে তাকে সহযোগিতা করছেন একজন নিকটাত্মীয়।
সোনিয়ার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের বকলা গ্রামে। বাবা মতিউর রহমান পেশায় দিনমজুর। স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে সোনিয়া। আর্থিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের কন্যা সোনিয়ার লেখাপড়াও অনিশ্চিত। তাই গত চার বছর ধরে সে টাকার বিনিময়ে অন্যজনের হয়ে ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
গত শনিবার ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় সোনিয়া টাঙ্গাইল জেলার সখিপুর গ্রামের আবুল হাশেমের হয়ে অংশ নেয়। এভাবেই প্রতিযোগিতা থেকে পাওয়া অর্থে দিয়ে চলছে সোনিয়ার পরিবার। পাশা পাশি নিজের লেখাপড়ার খরচও বহন করছে সে।
প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে আবুল হাশেমেরই ঘোড়া। তিনি পেয়েছেন রেফ্রিজারেটর ও টেলিভিশন।পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর।