টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংকের ৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা
কোভিড-১৯ টিকা কিনতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) থেকে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক পর্ষদ এই অনুমোদন দিয়েছে।
বাংলাদেশের ৫ কোটি ৪০ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে এই অর্থায়নের মাধ্যমে। টিকাদানের জন্য বাংলাদেশের গৃহীত 'কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস' শীর্ষক প্রকল্পে এই অর্থায়ন নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন সংগ্রহ, ভ্যাকসিনের সংরক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ ও দেশের ৩১ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের আওতায় আনতে সহায়তা করবে। বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেশের ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের আওতায় আনার প্রকল্পে এই অর্থায়ন সাহায্য করবে।
"কোভিড-১৯ মোকাবেলায় জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি হাতে নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ। কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ভ্যাকসিনের দ্রুত ও ন্যায্য সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ," বলেন ঢাকায় ও ভূটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি টেম্বন।
"দেশের এক-তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠীর জন্য দ্রুত ভ্যাকসিন সরবরাহে ও বাংলাদেশকে জাতীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে এই অর্থায়ন।" যোগ করেন তিনি।
জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে, কোভিড-১৯ শনাক্ত, প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় এবং ভবিষ্যতে জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতির প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে এ প্রকল্প।
সফল টিকাদান কর্মসূচির জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে ও দেশে ভ্যাকসিন পরীক্ষণের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও কাজ করবে।
কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশের ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য পাওয়া ভ্যাকসিন সরবরাহের খরচ মেটানো যাবে এই অর্থায়নের মাধ্যমে।
এছাড়া বাকি ১১ শতাংশ জনগোষ্ঠীর জন্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাকসিন ইনে নেওয়ার খরচ ও কোভ্যাক্সের মাধ্যমে পাওয়া ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের সংশ্লিষ্ট খরচ মেটানো যাবে এই অর্থায়নের মাধ্যমে। অন্যদিকে, সরকার নিজস্ব অর্থায়নেও ভ্যাকসিন কিনছে, যা আরও ৯ শতাংশ মানুষকে টিকার আওতায় আনবে।
"শিশু টিকাদানে বাংলাদেশের দীর্ঘ ও সফল ইতিহাসকে আরও এগিয়ে নিতে, যাদের কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাদের টিকাদানের আওতায় আনতে এ অর্থায়ন গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে," বলেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশন অফিসার ও প্রকল্পটির টাস্ক টিম লিডার ইফফাত মাহমুদ।
"টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনে ও জেলা পর্যায়ে ইনটেনসিভ কেয়ার সুবিধা সম্প্রসারণে সহায়তা করে যাবে এ প্রকল্প," যোগ করেন তিনি।
বর্তমানে এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের মোট অর্থায়নের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এই প্রকল্পে আরও ১০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছে।