ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত, আটক ১৪
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পূর্বাঞ্চল রেলপথে চলাচলকারী সকল ট্রেনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে নির্ধারিত যাত্রাবিরতি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে। প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট এবং ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে চলাচলকারী ১৪টি আন্তঃনগর ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শোয়েব আহমেদ জানান, 'পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি স্থগিত রাখা হবে। তবে মেইল ট্রেনের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা আমাদের দেওয়া হয়নি। যারা আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কেটেছেন তাদেরকে টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে'।
বিক্ষোভের ঘটনায় আটক ১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে এবং চট্টগ্রামে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর হামলার খবরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুর তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত জেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষুব্ধ মাদরাসা ছাত্ররা। এদিন বিকেল ৪ টার দিকে কয়েকশ মাদরাসা ছাত্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলাকারীরা স্টেশনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও টিকিট কাউন্টার ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে। এতে করে ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেটের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে রাত সাড়ে ১১টায় ট্রেন চলাচল স্বভাবিক হয়।
এ বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। তিনি জেলা সদরের দাতিয়ারা এলাকার সাগর মিয়ার ছেলে। এছাড়াও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ২নং ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) নূরে আলমসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে নূরে আলমকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়।
সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার (২৬ মার্চ) দিবাগত মধ্যরাত থেকে শনিবার (২৭ মার্চ) ভোর পর্যন্ত জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়। তবে আটককৃতদের নাম-পরিচয় জানায়নি পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুর রহিম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।