আইপিএলে মুস্তাফিজদের কঠিন রাত
৩ ওভারে ২৪ রান করা মুস্তাফিজুর রহমান নিজের শেষ ওভারটি করতে গেলেন। এই ওভারটি শেষ করা হলো না বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসারের। তার করা চতুর্থ বলটি ওয়াইড হয়ে সোজা সীমানার ওপাড়ে, ৫ রান। ততোক্ষণে বিজয় কেতন উড়ে গেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর।
২১ বল হাতে রেখেই প্রতিপক্ষের জয় তুলে নেওয়া ম্যাচে কঠিন সময়ই গেছে মুস্তাফিজের। অবশ্য কেবল মুস্তাফিজই নন, এই রাতে রাজস্থান রয়্যালসের সব বোলারদের ওপর দিয়েই ঝড় গেছে। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দেবদূত পাডিকালের ব্যাটিং তাণ্ডবে ১০ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে বেঙ্গালুরু।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে শিভাব ধুবে ও রাহুল তেওয়াটিয়ার ব্যাটে ৯ উইকেটে ১৭৭ রানের মতো বড় সংগ্রহ গড়ে রাজস্থান। কিন্তু এই রানও বেঙ্গালুরুর দাপুটে ব্যাটিংয়ে সামান্য হয়ে ওঠে। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান কোহলির ৭২ ও ম্যাচ সেরা পাডিকালের ১০১ রানের অনবদ্য ইনিংসে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় তুলে নেয় বেঙ্গালুরু। বিশাল এই সংগ্রহ ১৬.৩ ওভারেই তাড়া করে ফেলে কোহলির দল।
এবারের আইপিএলে রীতিমতো উড়ছে বেঙ্গালুরু। দারুণ এক জয়ে মিশন শুরু করা দলটি জিতেই চলেছে। টানা চার ম্যাচে জিতে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছেন কোহলিরা। মুস্তাফিজের দলের অবশ্য খারাপ সময় যাচ্ছেই না। চার ম্যাচে একটিতে জয় পাওয়া রাজস্থান পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে।
অনবদ্য ইনিংস খেলার পথে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই ছন্দে ব্যাটিং করে গেছেন পাডিকাল। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান আইপিএল ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করার রাতে রাজস্থানের কোনো বোলারকেই ছাড় দেননি। ১০১ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংসটি মাত্র ৫২ বলে ১১টি চার ও ৬টি ছক্কায় সাজান তিনি। অধিনায়ক কোহলি ৪৭ বলে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭২ রান করেন।
পাডিকালের তাণ্ডবের সামনে মুস্তাফিজও সাদামাটা থেকে যান। বাংলাদেশ পেসারের প্রথম ওভার থেকে এক চার ও এক ছক্কায় ১০ রান তোলেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণ ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় ওভারেও সুবিধা করতে পারেননি মুস্তাফিজ, খরচা করেন ১১ রান। তৃতীয় ওভারে দারুণ বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়ানো মুস্তাফিজ দেন মাত্র ৩ রান। আর শেষ ওভারের প্রথম ৪ বলেই দেন ১০ রান, সব মিলিয়ে তার খরচা ৩৩ রান।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা রাজস্থান শুরুতে মোহাম্মদ সিরাজ, কাইল জেমিসনদের বোলিংয়ের সামনে রীতিমতো ধুঁকেছে। ১৮ রানের মধ্যেই জস বাটলার, মানান ভোহরা, ডেভিড মিলারদের হারায় দলটি। দলীয় ৪৩ রানে অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন ফিরলে মুখ থুবড়ে পড়ে রাজস্থানের ইনিংস।
দিক হারানো দলটিকে পথে ফিরিয়ে বড় সংগ্রহে পৌঁছে দেন শিভাম ধুবে, রাইয়ান পরাগ, রাহুল তেওয়াটিয়ারা। ৪২ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৬ রান করেন ধুবে। ১৬ বলে ৪টি চারে ২৫ রান করেন পরাগ। তেওয়াটিয়া ২৩ বলে ৪টি চার ও দুটি ছক্কায় ৪০ রানের ইনিংস খেলেন। বেঙ্গালুরুর মোহাম্মদ সিরাজ ও হার্শাল প্যাটেল ৩টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান কাইল জেমিসন, কেন রিচার্ডসন ও ওয়াশিংটন সুন্দর।