মিতু হত্যাকাণ্ডে সাবেক এসপি বাবুলের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে: পিবিআই
আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের মামলা নতুন মোড় নিয়েছে, মিতু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
ঢাকায় আজ এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান উপ-মহাপরিদর্শক বনজ কুমার মজুমদার বলেন, "মিতু হত্যার জন্য বাবুল আক্তারকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করবেন তার শ্বশুর, তারপর তাকে নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে,"
"বাবুলের দুজন বন্ধু সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবাববন্দি দিয়েছেন। এর ভিত্তিতে পুরনো মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে,"
"বনজ কুমার আরও বলেন, "পিবিআই ডেকেছিল বাবুলকে ঢাকায়। গত বৃহস্পতিবার বাবুল বলেন উনি সোমবার ৯ টায় আসবেন। বাবুল পিবিআইকে কিছু প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। বিষয়গুলো আইজিপিকে জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকেও জানানো হয়। এ অবস্থায় পিছিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।"
হত্যাকাণ্ডে মুসার ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "মুসাকে ঘটনাস্থলে দেখা যায় সেদিন। মুসা নিয়মিত বাসায় যেতেন বাবুল আক্তারের। তার অনুপস্থিতিতে মুসা বাজারও করে দিতেন।"
এর আগে গত সোমবার মিতু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-কে নিশ্চিত করে বলেন, গত সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান বাবুল।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন মিতু। সে সময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল। পরবর্তী সময়ে তিনি পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আবু নাসের গুন্নু, শাহ জামান ওরফে রবিন, সাইদুল আক্তার শিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান, আনোয়ার ও ওয়াসিম নামের সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ থাকা এহতেশামুল হক ভোলা ও তার সহকারি মো. মনিরকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
২০১৬ সালের ২৪ জুন রাতে ঢাকার গোয়েন্দা কার্যালয়ে বাবুল আক্তারকে ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে তিন বছর তদন্তের পরও মামলার অগ্রগতি না হওয়ায় গত বছরের জানুয়ারিতে পিবিআইকে এ ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত দুই সন্দেহভাজন হত্যাকারী
পুলিশ তদন্ত করে জানতে পেরেছে হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামী কামরুল শিকদার মুসা বাবুল আক্তারের তথ্যদাতা ছিল।
পুলিশ এর আগে জানায়, মিতুকে হত্যার জন্য মুসা মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলাম রাশেদ, নূর নবী, কালু এবং মো শাহজাহানকে ভাড়া করে। এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ করে।
২০১৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর বাবুল আক্তার স্বীকার করেন যে মুসা তার তথ্যদাতা ছিল।
মোতালেব মিয়া ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, ভোলা, মো শাহজাহান ও মুসার বড় ভাই সাইদুল শিকদার শাকুরসহ বেশ কয়জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত এমিন সাত জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয় ওয়াসিম ও আনোয়ার।
তবে, প্রধান সন্দেহভাজন মুসা ও কালু এখনো পলাতক। আনোয়ার ও ওয়াসিমের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উলেখকৃত নুরুল ইসলাম রাশেদ ও নূর নবী ২০১৬ সালে চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।