খুলনায় পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন ৩ দিনের জন্য স্থগিত
খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন তিন দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১টায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনশনস্থলের প্যান্ডেল-স্টেজ সরানো হবে না বলে জানিয়েছেন পাটকল শ্রমিক নেতারা ।
এদিকে, অনশন স্থগিত হওয়ার পর নগরীর খালিশপুরের বিআইডিসি সড়ক থেকে ঘরে ফিরে গেছেন অনশনরত শ্রমিকরা।
প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, ১৫ ডিসেম্বরের সভায় দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারো অনশন কর্মসূচি পালন করা হবে।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির জানান, শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। ১৫ ডিসেম্বর দাবি পূরণ না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারও আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করা হবে।
মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের চলমান অনশন কর্মসূচি ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করার আহবান জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
শুক্রবার রাতে নগরীর বয়রাস্থ শ্রম অধিদপ্তরে আয়োজিত বৈঠক থেকে এ আহবান জানালে শ্রমিক নেতারা এতে সম্মতি দিয়ে বলেন, সাধারণ শ্রমিকদের কাছে এ প্রস্তাব দেয়া হবে। তারা যদি মেনে নেয় তাহলেই কেবল এটি বাস্তবায়ন হতে পারে।
মতবিনিময় সভায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এই পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনার বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাশ হয়েছে এবং এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে। প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের বলেন, দাবি-দাওয়া পূরণ করতে একটি সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ প্রেক্ষাপট তৈরি করা দরকার। এজন্য শ্রমিকদের চলমান অনশন ধর্মঘট প্রত্যাহার করার জন্য শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা বাস্তবায়ন দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য আমরণ অনশন শুরু হয়। এতে প্রায় অর্ধলক্ষ পাটকল শ্রমিক অংশ নেন। অনশনে গত বৃহস্পতিবার অসুস্থ হয়ে আব্দুস সাত্তার নামে জুবিলি জুট মিলের তাঁত বিভাগের একজন শ্রমিকদের মৃত্যু হয়। এছাড়া ২ শতাধিক শ্রমিক অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন।