মিতু হত্যা: কারাগারের বাইরে চিকিৎসার আবেদন বাবুলের, আদালতের ‘না’
মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় কারাবন্দি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার কারাগারের বাইরে যেকোনো হাসপাতালে চিকিৎসার অনুমতি চেয়েছিলেন। আদালত শুনানী শেষে তাকে কারাবিধি মেনেই চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমানের আদালত এই আদেশ দেন।
বাবুল আকতারের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, 'বাবুল আকতারের ফুসফুসে সমস্যা আছে। অনিয়মিত রক্তচাপে ভুগছেন। তাই আমরা কারাগারের বাইরে অন্য যেকোনো হাসপাতালে তার চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলাম।আদালত কারাবিধি অনুযায়ী তাকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য সিনিয়র জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।'
চট্টগ্রাম কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমাদের কারাগারে ১০০ শয্যার একটি হাসপাতাল রয়েছে। আদালত তাকে সেখানেই চিকিৎসা দিতে বলেছেন। এর বাইরে যদি কারা কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে করে তাহলে বিধি মেনে বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হতে পারে।'
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
হত্যাকাণ্ডের পরের বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালে মিতুর বাবার মোশাররফ হোসেন প্রথম এই খুনে বাবুলের জড়িত থাকার সন্দেহ প্রকাশ করেন।বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে বাবুল যা করেছেন সবটাই ছিল তার অভিনয়। নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাত ঘুরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলার তদন্তভার পড়ে পিবিআই'র ওপর। এরপর আস্তে আস্তে জট খুলতে থাকে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টিকারী চাঞ্চল্যকর এই মামলার।
গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই।
একই দিন (১২ মে) দুপুরে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আট জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই।