বাজেটে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ চাকরি হারিয়েছে কোভিডের কারণে
গত বছরের মার্চে দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর শুরু হওয়া প্রথম লকডাউনে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে পাঁচ কোটির বেশি কর্মীর জীবন-জীবিকা লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়ার আড়াই মাসের মাথায় বাজেট বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল করোনার কারণে মাত্র ১৪ লাখ মানুষ কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কার কথা জানান।
অবশ্য এর আগেই একাধিক গবেষণা সংস্থা পূর্বাভাস দিয়েছিল যে, করোনার কারণে দুই কোটির বেশি মানুষ কাজ হারাতে পারে, তাতে নতুন করে তিন কোটি মানুষ দারিদ্র্যবরণ করবে। ৬৬ দিনের প্রথম দফা লকডাউনে ২.৪৩ কোটি নতুন বেকার হওয়ার তথ্য বাজেট ঘোষণার চার মাসের মাথায় জানায় সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো।
সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, এবং সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে বেসরকারিখাত কর্মী ছাঁটাই করবে না- এমন অনুমান করে বাজেট প্রণয়ন করায় তাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি খুব বেশি গুরুত্ব পায়নি। আয়ের উৎস হারানোর বড় সমস্যাকে ছোট করে দেখে চলতি অর্থবছরের বাজেটে দেশে কাজ হারা ও বিদেশ ফেরত শ্রমিকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বরাদ্দ দেয়া হয় মাত্র ২০০০ কোটি টাকা।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) ৫০০ কোটি টাকা করে বরাদ্দের শতভাগ বাস্তবায়ন করতে পারেনি কয়েকটি সংস্থা। অর্থবছরের মাঝপথে এসে আরও আটটি সংস্থার মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করে প্রান্তিক পর্যায়ে জনগোষ্ঠীর মাঝে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও এখন পর্যন্ত ছাড় হয়েছে মাত্র ৫৩০ কোটি টাকা।
এর বাইরে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে চার লাখের বেশি মানুষের সারা বছরের কাজের ব্যবস্থার কথা বলা হলেও বছরের ১০ মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর অর্ধেকেরও কম বাস্তবায়ন হওয়ায় এ লক্ষ্যও অর্জন হয়নি। আর এই সময়ে সরকারি খাতে জনবল নিয়োগও এক প্রকার স্থবির হয়ে আছে।
গত বছরের শেষ প্রান্তিকে দেশে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর করপোরেট জব পোস্টিং মহামারির আগের অবস্থায় পৌঁছেছিল বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান বিডিজবস ডট কমের সিইও একেএম ফাহিম মাসরুর। তিনি বলেন, করোনার সেকেন্ড ওয়েভে তা আবার অর্ধেকে নেমে এসেছে।
একই অবস্থা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও। করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় সরকারি চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশ হচ্ছিল, ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু সেকেন্ড ওয়েভের কারণে সেসব নিয়োগও আটকে গেছে। ফলে প্রতিবছর সরকারি-বেসরকারিখাতে যে পরিমাণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়, এবার তা হয়নি।
বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা বলছে, প্রথম দফা লকডাউনে কর্ম হারানোদের বড় অংশ পরে কম মজুরিতে হলেও কাজ ফিরে পেয়েছিল। কিন্তু সেকেন্ড ওয়েভে গত ৫ মে থেকে শুরু হওয়া চলমান লকডাউনে তাদের অনেকে আবারও কাজ হারিয়েছেন। অনেকে আবার পরিবারসহ রাজধানী ছাড়ছেন।
অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ যুবক কাজের বাজারে প্রবেশ করে। এর মধ্যে ১২-১৩ লাখ কর্মসংস্থান হয় সরকারি ও বেসরকারি খাতে। ৫-৭ লাখ মানুষ কাজ নিয়ে বিদেশ যাওয়ার পরও বেকার থাকেন প্রায় দুই লাখ।
কিন্তু এই মহামারির বছরে পুরো হিসাবই উল্টে গেছে। বিদেশে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ কমার পাশাপাশি ফেরত আসা শ্রমিকদের সংখ্যা বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে দেশে বেসরকারি ও বিদেশি উৎস থেকে যে পরিমাণ বিনিয়োগ হয়, এবার তাও হয়নি। ফলে ই-কমার্সখাত ছাড়া অন্যান্য খাতে নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়নি।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় চলতি অর্থবছর দেশে ১৪.৩ লাখ ও দেশের বাইরে ৫.৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অর্জন করা বর্তমান বাস্তবতায় অসম্ভব বলে মনে করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. শামসুল আলম।
টিবিএসকে তিনি বলেন, মোট দেশজ উৎপাদনে ৭.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরে এবার দেশে ও বিদেশে ২০.১ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল। করোনা মহামারির কারণে বেসরকারি খাতে এবার বিনিয়োগ ও উৎপাদনে প্রবৃদ্ধি কম হবে। তাই প্রত্যাশিতহারে কর্মসংস্থানও হবে না।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলেন, এটা বাস্তবতা যে, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর বিশাল একটা অংশ কাজ হারিয়ে দরিদ্র হয়েছেন। তবে কর্মসংস্থান রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনার ব্যবস্থা হলেও নতুন কর্মসৃজনের ব্যবস্থা চলতি বছরের বাজেটে ছিল না।
তিনি বলেন, পোশাক খাতে কর্ম ধরে রাখতে কর্মীদের বেতন হিসেবে প্রণোদনা দেয়া হলেও সব কারখানা ও শ্রমিক এ সুবিধা পায়নি। তা ছাড়া প্রণোদনা পাওয়া প্রতিষ্ঠানও কর্মী ছাঁটাই করেছে। আগামী বাজেটে কর্মসৃজনে প্রাধান্য দিয়ে বড় বরাদ্দ রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা থাকে ব্যক্তিখাতের। করোনার আঘাতে ব্যক্তিখাত বিশেষ করে শ্রমনির্ভর কুটির, অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে বেশি ক্ষতি হওয়ায় কর্মসংস্থান কমেছে বলেও তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, রপ্তানি আয়, শিল্প উৎপাদন, বেসরকারি ঋণপ্রবাহ, মেয়াদী ঋণ বিতরণ, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আহরণের তথ্য পর্যালোচনা করলেও সহজেই বলা যায় যে, ব্যক্তিখাতে কাজের পরিমাণ কমেছে।
'সরাসরি নিয়োগ ও অবকাঠামো খাতের প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সরকারের পক্ষ থেকেও কিছু কর্মসৃজন করা হয়ে থাকে। তবে হতাশার কথা হলো, সরকারের বড় প্রকল্পগুলোর স্থবিরতায় অর্থবছরের ১০ মাসে এডিপির অর্ধেকও বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। করোনার কারণে সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়াও ঝুলে রয়েছে', যোগ করেন তিনি।
বাজেটে কি ছিল, বাস্তবায়ন কতটা?
সরকারি ব্যয়ে কর্মসৃজনকে চার অগ্রাধিকারের শীর্ষে রেখে বাজেট বক্তব্য সাজিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। শিল্প খাতে কর্মসৃজনের গতি বাড়াতে ব্যবসা ও বিনিয়োগের আধুনিকায়ন ও দক্ষতা বাড়ানোতে বিভিন্ন জেলায় নতুন কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছিলেন, পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে ৪ লাখের বেশি মানুষের সরাসরি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি প্রত্যক্ষভাবে আরও অনেক কাজের সুযোগ করা হবে।
দক্ষতা বাড়াতে ২৩ জেলায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্পে এ বছর ২৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও লক্ষমাত্রা অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় সংশোধিত এডিপিতে তা ৬০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
৩৬৯১ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ২০১৮ সালে নেওয়া প্রকল্পটিতে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে মাত্র ১৭৮ কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া এ প্রকল্পে আগামী বছরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৬০ কোটি টাকা। এই হারে বরাদ্দ আর বাস্তবায়ন অব্যাহত থাকলে দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারের অগ্রাধিকারে থাকা এ প্রকল্পের কাজ শেষ হতে ২০ বছরের বেশি সময় লাগবে।
৫৯০০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরে সিটি করপোরেশনের বাইরে সারা দেশের সব সংসদীয় এলাকার উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের বিপরীতে এপ্রিল পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৭১ কোটি টাকা যা বরাদ্দের মাত্র ৩৫ শতাংশ। অবকাঠামো উন্নয়নে পল্লীতে কর্মসৃজন ও দক্ষতা উন্নয়নে নেয়া প্রকল্পগুলো এভাবেই ঝুলে আছে।
অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাজেটে শীর্ষ অগ্রাধিকারের কথা বলা হলেও কর্মসৃজনে বরাদ্দ তেমন দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, করোনার প্রকোপ না কমলে কর্মসংস্থান হবে না। তাই সরকারি ব্যয়ে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত স্বাস্থ্য খাত। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে আগামীতে প্রযুক্তি শিক্ষা ও দক্ষতা বড় ভূমিকা রাখবে। এ হিসাবে অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত শিক্ষা খাত।
তাছাড়া কলকারখানায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা, কর্মীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনার জন্যেও প্রচুর বিনিয়োগ দরকার।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, করোনা মহামারির সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ খাতগুলো এডিপি বরাদ্দ পাওয়া শীর্ষ তিন খাতের মধ্যে নেই। এ থেকেই বুঝা যায়, কর্মসংস্থানে কতটা অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
প্রবাসী কর্মসংস্থানেও মন্দা
২০১৯ সালে সাত লাখের বেশি শ্রমিক বিদেশ গেলেও গত বছর গেছেন ২.১৭ লাখ। এপ্রিল-জুন সময়ে একজনও বিদেশ যেতে পারেননি। জুলাইয়ে মাত্র ১৬ জনের যাত্রার মাধ্যমে খুলতে থাকে শ্রমবাজার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে ১.২১ লাখ মানুষ বিদেশ গেছেন। ফেব্রুয়ারিতে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বিদেশ যাওয়ার পর দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর কার্যত প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, গত বছর সব ধরনের প্রস্তুতি সত্ত্বেও কয়েক লাখ লোক বিদেশ যেতে পারেননি। চলতি বছরের শুরুতে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় আবার পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
তিনি বলেন, মূল শ্রমবাজার সৌদি আরব সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতমূলক করেছে, বাড়ছে বিমান ভাড়াও। এতে প্রতি শ্রমিকের বাড়তি খরচ হবে ১.৫ লাখ টাকা, যা শ্রমিকদেরই বহন করতে হবে।
বিশ্বাসযোগ্য টিকাদান কর্মসূচী শেষ হওয়ার আগে প্রবাসী কর্মসংস্থানে সুসংবাদ আসবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কি থাকছে আসছে বাজেটে
করোনার প্রভাব কিংবা চলমান লকডাউনে নতুন করে কি পরিমাণ বেকার হচ্ছেন, তার তথ্য নেই সরকারি-বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলোর কাছে। ফলে কর্মহীনদের সংখ্যা, তাদের কর্ম-প্রকৃতির ধরন না জেনেই ৩ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। ফলে নতুন বাজেটেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাড়তি কিছু থাকছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
২০২১-২২ অর্থবছরেও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এবারের মতো ২০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হবে। এছাড়া, যে আটটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫০০ কোটি টাকা ক্ষুদ্রঋণ বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে অব্যয়িত ৯৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে।
কর্মকর্তারা জানান, কোভিড মোকাবেলায় সরকার যে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, তার বড় অংশই তিন বছর মেয়াদি। এই সময়ে ঋণের চাহিদা বেড়ে গেলে তহবিলের আকার বাড়ানো হবে, করোনা দীর্ঘায়িত হলে তহবিলের মেয়াদও বাড়াবে। তবে আগামী বাজেটে নতুন কোন প্রণোদনার ঘোষণা থাকছে না। প্রয়োজনে কর্মহীনদের জন্য চলতি অর্থবছরের মতো নগদ সহায়তা দেবে সরকার।
সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, করোনার আগে দেশে বেকার ছিল ২৭ লাখ। গত সেপ্টেম্বর এক জরিপের ফলাফলে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো জানায়, বেকারের হার ১০ গুণ বেড়েছে। অর্থাৎ, বেকারের সংখ্যা দাঁড়ায় ২.৭০ কোটি। ঐ সময় যাদের কাজ ছিল, তাদের আয় কমে যাওয়ায় ব্যয়ও কমাতে হয়েছে। অবশ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যেই দিনমজুর ছাড়া অন্যান্য খাতের কর্মীদের আবার কাজের ব্যবস্থা হয়েছিল বলে জানায় বিবিএস।
করোনার প্রথম ধাক্বায় ১.১১ কোটি থেকে ২.০৫ কোটি মানুষ বেকার হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ বিলস।
সিপিডির তথ্যমতে, দেশের ৬১ শতাংশের বেশি মানুষ গত বছরের লকডাউনের কোন না কোন পর্যায়ে বেকার ছিলেন। তারা গড়ে তিন মাস বেকার ছিলেন এবং সবাই ছয় মাসে কাজ ফিরে পায়।
করোনার আগে কাজ ছিল এমন ১৭ শতাংশ মানুষ গত জুন মাসে বেকার ছিলেন বলে জানায় বিআইজিডি ও পিপিআরসির যৌথ গবেষণা। দুই সংস্থা দাবি করেছে গত মার্চে এ সংখ্যাটি আট শতাংশে নেমেছিল।