বিরল রক্ত জমাট বাঁধার কারণ শনাক্তের দাবি জার্মান অধ্যাপকের
অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন গ্রহণে বিরল রক্ত জমাট বাঁধার কারণ শনাক্তের দাবি করেছেন এক জার্মান অধ্যাপক।
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের গ্যেথে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রোল্ফ মার্শালেক জানান, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কর্তৃক উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের সাথে সংযুক্ত বিরল রক্তের জমাট বাঁধার কারণটি তিনি উত্থাপন করতে পেরেছেন।
এছাড়া ভ্যাকসিনটির উৎপাদকদের জন্য ব্লাড কট বা রক্ত জমাট বাঁধার এ সমস্যা সমাধানের উপায়ও বাতলে দিয়েছেন তিনি।
এডেনোভাইরাসকে ভেক্টর হিসেবে ব্যবহার করে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে। এই ভেক্টরকে কেন্দ্রে রেখেই মার্শালেকের গবেষণা। দেহে প্রবেশের পর করোনার মত স্পাইক প্রোটিন তৈরি করে শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তুলে এটি। স্পাইক প্রোটিনকে সাইটোসল তরলের পরিবর্তে কোষের কেন্দ্র নিউক্লিয়াসে প্রেরণ করে ভ্যাকসিন। কেননা, এই নিউক্লিয়াসেই ভাইরাসও প্রোটিন উৎপন্ন করে থাকে।
(তবে ফাইজার-বায়োএনটেক এবং মডার্না ভ্যাকসিন কোষের নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করে না)। মূল ব্যাপারটি হলো একবার স্পাইক প্রোটিন নিউক্লিয়াসে প্রবেশ করার পরে কিছু অংশ বিভাজিত হয়ে পড়ে এবং মিউট্যান্ট (এক্ষেত্রে নতুন প্রকরণ) তৈরি করে। তত্ত্বীয়ভাবে বলা যায়, এই মিউট্যান্ট প্রোটিনগুলোই তখন দেহকোষের ভেতর একপ্রকার ছদ্মবেশে থাকে এবং মারাত্মক রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা তৈরী করতে পারে।
মার্শালেক যুক্তি-তত্ত্ব উপস্থাপনের মাধ্যমে পরামর্শ দিয়েছেন যে, ভ্যাকসিন উৎপাদকেরা যদি 'স্পাইক প্রোটিনের ক্রমটি (সিকোয়েন্স) পরিবর্তন করতে পারেন' তাহলে এ সমস্যা কাটানো সম্ভব। কেননা, এর মাধ্যমে কোষের ভেতর প্রোটিনের বিভাজন রোধ করা হবে।
জনসন অ্যান্ড জনসন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারকরা ইতিমধ্যে তার গবেষণাগারের সাথে 'দিকনির্দেশনার' জন্য যোগাযোগ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জার্মানির বন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জোহানেস ওল্ডেনবার্গ মন্তব্য করেছেন, "এই গবেষণাটি এখনো তত্ত্বীয় এবং অনুমাননির্ভর অবস্থায় রয়েছে, যথার্থ পরীক্ষামূলক তথ্য দ্বারা এর প্রমাণ হওয়া প্রয়োজন আগে"।
উল্লেখ্য, রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনায় সতর্কতার অংশ হিসেবে গত মাসের শুরুতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন প্রয়োগ বন্ধের ঘোষণা দেয় ইউরোপের অনেক দেশ।
- সূত্র- ইয়াহু নিউজ