হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের
আগামী বুধবার (৯ জুন) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পণ্য রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। রোববার বিকেলে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছেন তারা।
ভারত থেকে যেসব ট্রাকচালক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন তাদের সবাইকে ৮ জুনের মধ্যে টিকা প্রদান সম্পন্ন করার দাবি তোলায় ও করোনা সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশে ট্রাক প্রবেশের সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, যেসব ট্রাক চালক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন তাদেরকে যেন আগামী ৮ জুনের মধ্যেই করোনার টিকা প্রদান করা হয়। একইসঙ্গে করোনার সংক্রামণ ও বিস্তার রোধে ট্রাক চালকরা পণ্য নিয়ে যেদিন বাংলাদেশে প্রবেশ করবেন সেদিনই যাতে পণ্য খালাস করে ভারতে ফিরে যেতে পারেন সেজন্য প্রতিদিন ৫০টির বেশি ট্রাক দেশে প্রবেশ করবে না।
এমন ঘোষণা রোববার থেকেই কার্যকর হয়েছে। আর এদিন বিকেলেই ভারতের ব্যবসায়ী সংগঠন হিলি এক্সপোটার্স অ্যান্ড কাস্টমস ক্লিয়ারিং এজেন্ট আ্যসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ধীরাজ অধিকারী স্বাক্ষরিত এক চিঠি এসেছে বাংলাদেশের হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের কাছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী আগামী ৮ জুনের মধ্যে রপ্তানি পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যাওয়া আমাদের সব ভারতীয় ট্রাক চালককে করোনার টিকা প্রদান করা সম্ভব নয়। এর কারণ পুরো দেশজুড়েই করোনার টিকার অভাব আছে। আগের মতো বন্দর দিয়ে দু'দেশের মাঝে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চালু রাখতে হবে। আপনাদের একক সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিতে পারছি না। এতে আমরা অপমানিত বোধ করছি। অন্যান্য স্থলবন্দরের মতো হিলি স্থলবন্দরেও গাড়ি স্বাভাবিকভাবে নিতে হবে। আজ (রোববার) এ নিয়ে অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।'
চিঠির ব্যাপারে জানতে হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি হারুন-উর রশিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "ভারতীয় ব্যবসায়ীরা যদি পণ্য রপ্তানি বন্ধ করে তাহলে আমাদের করার কিছু নাই। তাদের মূল দাবি আগে যেভাবে প্রতিদিন দেড়শ থেকে দুইশ ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতো সেভাবেই কার্যক্রম চলমান থাকুক,"
"কিন্তু এ পরিমাণ ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করলে একদিনেই পণ্য খালাস করে তারা ভারতে ফিরে যেতে পারবেন না। এজন্য তারা হিলি স্থলবন্দরের অভ্যন্তরে কিংবা আবাসিক হোটেলে থাকেন। এতে করে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। এজন্য করোনা সংক্রমণ রোধে স্থানীয় প্রশাসন, বন্দর কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে বন্দরের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কমিয়ে ৮০ ট্রাক করে নির্ধারণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় তা আরও কমিয়ে ৫০ ট্রাক করে নির্ধারণ করা হয়।"
গতকাল রোববার (৬ জুন) থেকেই তা কার্যকর হয় বলে জানান তিনি।