ঋত্বিক ঘটকের পৈতৃকভিটা ভেঙ্গে ফেলায় ১২ চলচ্চিত্র নির্মাতার প্রতিবাদ
বিশ্ববরেণ্য বাঙালি চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি রাজশাহীর মিঞা পাড়ার ভবনটি ভেঙ্গে ফেলায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ১২ চলচ্চিত্র নির্মাতা। মঙ্গলবার বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রকিবুল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্যোগকে তারা ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেন।
বিবৃতিদাতা চলচ্চিত্র নির্মাতারা হলেন- নাসির উদ্দীন ইউসুফ, তানভীর মোকাম্মেল, মানজারে হাসীন মুরাদ, মোরশেদুল ইসলাম, এনায়েত করিম বাবুল, জাহিদুর রহিম অঞ্জন, শামীম আক্তার, নূরুল আলম আতিক, এন রাশেদ চৌধুরী, ফওজিয়া খান, আকরাম খান ও রাকিবুল হাসান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, “পরিত্যাক্ত ওই বাড়িতে একটি 'ঋত্বিক চলচ্চিত্র কেন্দ্র' প্রতিষ্ঠা দেশের চলচ্চিত্র কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি। কিন্তু সামরিক শাসন এবং স্বৈর শাসনকালে সে স্থানে একটি হোমিওপ্যাথ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। রাজশাহীর 'ঋত্বিক চলচ্চিত্র সংসদ' কর্মীরা সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের কাছে ঐতিহ্যবাহী বাড়িতে একটি চলচ্চিত্র কেন্দ্র করার জন্য দাবিপত্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেন। কিন্তু বিগত তিন বছরেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি।”
এতে আরও বলা হয়, “গত ২১ ডিসেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষ সাইকেল স্ট্যান্ড করার অজুহাতে ভবনের একটি অংশ গুড়িয়ে দেয়। আমরা এ হীন কাজের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। বিষয়টি আজ (মঙ্গলবার) সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে, এম খালেদ বাবু'র গোচরে এলে তিনি দ্রুত জেলা প্রশাসককে ভাঙ্গার কাজ স্থগিত করতে আশু পদক্ষেপ গ্রহণে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। নির্দেশ মতো ভাঙ্গার কাজ স্থগিত হয়েছে। কিন্তু আমরা মনেকরি এটা সাময়িক ব্যবস্থা।”
তারা বলেন, “বাংলা চলচ্চিত্রের নিজস্ব ভাষা নির্মাণে ঋত্বিক ঘটক একটি অবিস্মরণীয় নাম। তিনি আমাদের এই বাংলাদেশে জন্মেছিলেন এতো আমাদের শ্লাঘার বিষয়।”
বিবৃতিদাতারা বলেন, “আমরা অনতি বিলম্বে 'ঋত্বিক সেন্টার' প্রতিষ্ঠা এবং আমাদের চলচ্চিত্রের ঐতিহ্য রক্ষার জন্য ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক ভবনটিকে 'হেরিটেজ' ঘোষণা করে স্থায়ী সমাধানের আহ্বান জানাচ্ছি। দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্র প্রদর্শন, গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উৎসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে উত্তরবঙ্গে একটি ভিন্নমাত্রার চলচ্চিত্র আন্দোলন এই প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে। আর এই ধরনের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুললে আমাদের চলচ্চিত্র সংস্কৃতির বিকাশ সাধিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
হোমিওপ্যাথ কলেজটি ভিন্ন একটি স্থানে স্থানান্তর করে 'ঋত্বিক চলচিত্র কেন্দ্র' প্রতিষ্ঠা করার দাবিও জানান তারা।