এ যেন সেই আগের আশরাফুল
তাকে বলা হতো বাংলাদেশের আশার ফুল। তার ব্যাটের দিকে তাকিয়ে থাকতো পুরো দেশ। চোখ ধাঁধানো সব শটে আনন্দ উযাপনের উপলক্ষ এনে দিতেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সেই দিন ফুরিয়েছে বেশ আগে। ফিক্সিং কাণ্ডে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি কাটিয়ে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান মাঠে ফিরেছেন কয়েক বছর হলো, কিন্ত ফেরেনি সেই আগের আশরাফুল।
যার ব্যাটে বাংলাদেশের হাসির গল্প লেখা হতো, সেই আশরাফুল জাতীয় দলে ব্রাত্য অনেকদিন ধরে। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে টেনে নিচ্ছেন ক্যারিয়ার। এই ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখা মিললো আগের সেই আশরাফুলের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে সুপার লিগের ম্যাচে চোখ জুড়ানো কভার ড্রাইভসহ হুক, পুল, স্কুপ শটে অসাধারণ এক ইনিংস খেললেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এই ব্যাটসম্যান।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আবাহনী লিমিটেডের দেওয়া বড় লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে শুরু থেকেই হাত খুলে খেলেছেন ম্যাচ সেরা আশরাফুল। অন্য প্রান্তের উইকেট পতনেও মনোযোগ নড়েনি তার। ৪৮ বলে ৮টি চার ও ২টি ছক্কায় ৭৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে শেখ জামালকে ৬ উইকেটের জয় এনে দেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেওয়া নাসির হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, জিয়াউর রহমানরাও এদিন দারুণ ব্যাটিং করেছেন।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামে আবাহনী। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে ৭ উইকেটে ১৭৩ রান তোলে প্রিমিয়ার লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়রা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭০ রানের ইনিংস খেলেন অনেকদিন ধরেই ব্যাট হাতে রান খরায় ভোগা লিটন কুমার দাস। এ ছাড়া নাঈম শেখ ৪৬, অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৭ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ১৯ রান করেন। শেখ জামালের জিয়াউর রহমান ও মিনহাজুল আবেদীন আফ্রিদি দুটি করে উইকেট নেন।
জবাবে ব্যাটিংয়ে নেমে দুঃস্বপ্নের শুরু হয় শেখ জামালের। দলীয় ১২ রানের মধ্যেই ওপেনার সৈকত আলী ও ইমরুল কায়েসকে হারায় তারা। এরপরও অবশ্য দলটিকে বিপদে পড়তে হয়নি। তৃতীয় উইকেটে নাসিরের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন আশরাফুল। মারকুটে মেজাজে ব্যাটিং করা নাসির ২২ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৬ রান করে আউট হন।
এরপর অধিনায়ক সোহানকে নতুন সঙ্গী হিসেবে পান আশরাফুল। এই জুটি থেকে ৬০ রান পায় শেখ জামাল। পুরো টুর্নামেন্টে চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করা সোহান ২২ বলে একটি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৬ রান করে ফেরেন। বাকি কাজটুকু জিয়াউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সারেন আশরাফুল। জিয়া ৯ বলে ২টি চার ও ২টি ছক্কায় অপরাজিত ২২ রান করেন।