মেঘনায় ধরা পড়ছে রুপালি ইলিশ, আকারে ছোট হলেও খুশি হাতিয়ার জেলেরা
৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে নেমেছেন নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার জেলেরা। শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মেঘনার বিভিন্ন পয়েন্টে মাছ শিকার করছে তারা। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় গভীর সমুদ্রে যেতে পারছেন না জেলেরা।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত হাতিয়ার সূর্যমূখী ঘাট, চেয়ারম্যানঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে অনেক জেলে তাদের জালগুলো প্রস্তুত করছেন। শুক্রবার রাতে অধিকাংশ জেলে মাছ ধরতে বের হলেও কেউ কেউ শনিবার রাতে নদীতে মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য জাল ও নৌকা প্রস্তুত করছেন।
জেলেরা জানান, 'মাছের প্রজননের জন্য গত ২০ মে থেকে ২৩জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় মাছ ধরাতে নিষেধাজ্ঞা ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আমরা মাছ শিকারে নামি। শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত আমাদের জালে প্রচুর পরিমাণে রুপালি ইলিশ ধরা পড়েছে। তবে এইবার মাছে সাইজ তুলনামূলকভাবে ছোট। তারপরও আমাদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ায় আমরা খুশি।'
আবহাওয়া খারাপ হওয়ার কারণে গভীর সমুদ্রে যেতে পারছেন না বলে জানান জেলেরা। গভীর সমুদ্রে যেতে পারলে বড় মাছের সন্ধান পাওয়া যাবে বলেও আশা করছেন তারা।
এদিকে, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর নদীতে মাছ শিকারে নামতে পারায় উপজেলার জেলে পল্লীগুলোতে আনন্দের জোয়ার বইছে, হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখে। তবে শুক্রবার ভোর থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ায় নদী কিছুটা উত্তাল। সবকিছু চাপিয়ে মাছ ধরতে পারায় খুশি জেলেরা।
স্থানীয় জেলে নবীর মাঝি জানান, নৌকা ও জেলেদের নিয়ে শুক্রবার রাতে নদীতে মাছ শিকারে গিয়ে শনিবার সকালে ঘাটে ফিরে এসেছেন। নিজের ছোট নৌকা দিয়ে প্রায় ৫ ঘণ্টায় ২০ কেজির মতো মাছ পেয়েছেন। গত বছরের তুলনায় এবার মাছগুলো আকারে ছোট।
বুড়ির চর জেলে সমিতির সভাপতি জবিউল হক বলেন, 'দীর্ঘদিন পরে জেলেরা নদীতে মাছ শিকার করতে পারায় তাদের মাঝে প্রচুর আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। ঘাটে জেলেদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।'
উপজেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি রাশেদ উদ্দিন বলেন, 'আমাদের সমিতির অধীনে হাতিয়ায় ২৫৭টি বড় মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলার গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করে। গতরাত থেকে এসব ট্রলার সমুদ্রে চলে যাচ্ছে। কিছু কিছু আজকে যাবে। তবে সাগর কিছুটা উত্তাল থাকায় জেলেদের মাছ শিকার কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।'
হাতিয়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা অনিল চন্দ্র দাস বলেন, 'হাতিয়ায় কার্ডধারী মোট ১২ হাজার ৩৭০ জন জেলে রয়েছেন। বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে নদী কিছুটা উত্তাল। এ সময় মাছ ধরার নৌকা নিয়ে গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের জন্য ঝুঁকি। এবার তাদের জালে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে বলে জেলেরা আমাদের জানিয়েছেন।'
কয়েকদিনের মধ্যে গভীর সমুদ্র থেকে বড় ইলিশ উঠে এলে সেগুলো জেলেদের জালে ধরা পড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।