টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে যে রেকর্ডের মালিক কেবল সাকিব
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে আর কোনো অলরাউন্ডার এতোটা দাপট দেখাতে পারেননি। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে বিপাকে ফেলা তার বাঁহাতের খেল। ব্যাট হাতে দলকে পথ দেখাতেও তার জুড়ি নেই। তার মাথায় সেরার মুকুট উঠবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। ব্যাটে-বলে দীর্ঘদিন বিশ্ব ক্রিকেট শাসন করে আসা সাকিব সোমবার একটি রেকর্ড গড়লেন। যে রেকর্ড বইয়ের জন্মই হলো তার হাতে।
বাংলাদেশ প্রাণ ভোমরা এমন একটি রেকর্ড গড়লেন, যা ক্রিকেট বিশ্ব দেখল প্রথমবার। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬০ রানের দাপুটে জয় তুলে নেওয়ার পথে মাত্র ৯ রান খরচায় ৪টি উইকেট নিয়েছেন সাকিব। এই ৪ উইকেটে বাংলাদেশের প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁলেন তিনি।
স্পিনার হিসেবে তার কীর্তি আরও বড়। বিশ্বের প্রথম স্পিনার হিসেবে এই ফরম্যাটে ১০০ উইকেটের মালিক হলেন সাকিব। বোলার সাকিবের রেকর্ডের চেয়ে অলরাউন্ডার সাকিবের রেকর্ডটি আরও বড়। টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে ১০০ উইকেট ও ১ হাজার রানের মাইলফলক গড়েছেন তিনি।
এই রেকর্ডে সাকিবের ধারে কাছেও কেউ নেই। ৯৮ উইকেট ও ১ হাজার ৪১৬ রানের মালিক শহীদ আফ্রিদি ক্রিকেট ছেড়েছেন বেশ আগে। ডোয়াইন ব্রাভো ও মোহাম্মদ নবীর ১ হাজার রানের বেশি থাকলেও তারা ৮০ উইকেটের গন্ডি পেরোতে পারেননি। উইন্ডিজ অলরাউন্ডার ব্রাভো ৭৬ ও নবী ৭২ উইকেটের মালিক।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে সাকিবের উইকেট ছিল ৯৫টি। তার ৫ উইকেটের অপেক্ষা প্রথম চার ম্যাচে ফুরায়নি। প্রথম তিন ম্যাচে একটি করে উইকেট নেওয়া সাকিব চতুর্থ ম্যাচে ছিলেন উইকেটশূন্য। শেষ টি-টোয়েন্টিতে কেবল অপেক্ষাকেই ছুটিতে পাঠালেন না তিনি, একশর গন্ডি পেরিয়ে সাকিব এখন ১০২টি টি-টোয়েন্টি উইকেটের মালিক।
বাংলাদেশের হয়ে ৮৪ টি-টোয়েন্টি খেলা সাকিব ১ হাজার ৭১৮। বল হাতে ১০২ উইকেট নিয়ে বিশ্ব টি-টোয়েন্টিতে দুই নম্বরে তিনি। ১০৭ উইকেট নিয়ে শ্রীলঙ্কার সাবেক পেসার লাসিথ মালিঙ্গা সবার উপরে। ৯৯ উইকেট নিয়ে নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদি আছেন তিন নম্বরে। ৯৮ উইকেটের মালিক শহীদ আফ্রিদি চারে এবং ৯৫ উইকেট নিয়ে রশিদ খান রয়েছেন পাঁচ নম্বরে।
স্পিন ঘূর্ণিতে অজিদের পথ ভুলিয়ে দেওয়া সাকিব ম্যাচ সেরার পুরস্কার জিতেছেন। সিরিজ সেরার পুরস্কার উঠেছে তার ঝুলিতে। মিরপুরে ধীর গতির উইকেটে দুই দলের কোনো ব্যাটসম্যানই সেভাবে রান করতে পারেননি। তাই পাঁচ ম্যাচে ২২.৮০ গড়ে ১১৪ রান করেই দুই দলের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাকিব। পাঁচ ম্যাচে সাকিবের উইকেট ৭টি। বাংলাদেশের মুস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামও ৭টি করে উইকেট নিয়েছে। ৮ উইকেট নিয়ে সবার উপরে অস্ট্রেলিয়ার পেসার জন হ্যাজেলউড।