যৌন নিপীড়ন: ব্রিটিশ প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ভার্জিনিয়া জিউফ্রের মামলা
যুক্তরাজ্যের ডিউক অব ইয়র্কের সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের জন্য ১৭ বছর বয়সে তাকে সে দেশে নিয়ে আসা হয় বলে অভিযোগ করেছেন এক মার্কিন নারী। প্রিন্স তাকে অপব্যবহার করেছেন বলে নিউইয়র্কে একটি দেওয়ানি মামলা দায়ের করেন এই নারী।
ভার্জিনিয়া জিউফ্রে ছিলেন দোষী সাব্যস্ত হওয়া যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী। লন্ডন ও নিউইয়র্কে প্রিন্স অ্যান্ড্রু তাকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন বলে দাবি জিউফ্রের।
তার মামলায় নিউইয়র্কের চাইল্ড ভিকটিমস অ্যাক্টের উল্লেখ রয়েছে। এ আইনে নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীদের মামলা করার অধিকার বাড়ানো হয়েছে।
মামলায় বলা হয়, পূর্বে ভার্জিনিয়া রবার্টস নামে পরিচিত জিউফ্রেকে প্রিন্স অ্যান্ড্রু যৌন নির্যাতন করেন। এপস্টেইনের সহযোগী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েলের লন্ডনের বাড়ি, ম্যানহ্যাটনে এপস্টেইনের বাড়ি এবং মার্কিন ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের লিটল সেন্ট জেমসে নির্যাতনের ঘটনাগুলো ঘটে বলে উঠে আসে মামলায়।
অপরদিকে, এপস্টেইনের সঙ্গে চারজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে অপব্যবহারের ষড়যন্ত্রের দায়ে ম্যাক্সওয়েল নির্দোষ হিসেবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন। নভেম্বরে তার বিচার হবে।
তবে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ২০১৯ সালে জিউফ্রের দেওয়া অভিযোগ সম্পর্কে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেন, সেসব 'কখনো ঘটেনি।'
বিবিসি নিউজনাইটকে তিনি বলেন, 'এসব ঘটনা ঘটেনি। আমি স্পষ্টভাবে বলতে পারি, এটা কখনো ঘটেনি। ওই নারীর সঙ্গে দেখা হওয়ার কোনো স্মৃতি আমার নেই।'
এর পরের বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, 'জেফ্রি এপস্টেইনের সঙ্গে অসৎভাবে যুক্ত থাকার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। তার আত্মহত্যা বিশেষ করে তার ভুক্তভোগীদের জন্য অনেক প্রশ্ন রেখে গেছে। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং যারা এ অবস্থার শেষ চান, তাদের প্রতি আমার গভীর সহানুভূতি রয়েছে। আমি শুধু এটাই আশা করতে পারি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের জীবন নতুন করে সাজাতে সক্ষম হবেন। প্রয়োজনে অবশ্যই আমি যেকোনো উপযুক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে তাদের সাহায্য করব।'
তবে নতুন আইনি অভিযোগে উঠে আসে, ডিউক ও তার প্রতিনিধিরা তাদের কাছে থাকা তথ্য বা ব্যাখ্যা দেওয়ার এবং এ বিরোধ নিষ্পত্তির বিকল্প পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। এমতাবস্থায়, বাকিংহাম প্যালেস ও ডিউক অব ইয়র্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতামতের জন্য যোগাযোগ করেছে বিবিসি।
গত বছর নিউইয়র্কের গভর্নর অ্যান্ড্রু কোমো দেশটির চাইল্ড ভিক্টিমস অ্যাক্টকে নির্যাতনের শিকার অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য 'ন্যায়বিচারের পথ' হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। ২০১৯ সালে পাস হওয়া এ আইন প্রাথমিকভাবে এক বছর সময়ের মধ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ বা সময়-নিষিদ্ধ অভিযোগের জন্য মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছিল। পরবর্তীকালে কোভিড মহামারির কারণে চলতি বছরের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়।
-
সূত্র: বিবিসি