শিশুদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার
তিন মাস পর দেশে করোনাভাইরাসের পজিটিভিটি রেট ১০% এর নিচে নেমেছে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এ মাসেই স্কুল খুলতে যাচ্ছে সরকার।
এতোদিন ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেয়া হলেও এখন শিশুদের ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
শনিবার রাজধানীর তেজগাঁও মহিলা উচ্চ বিদ্যালয়ে বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের পরীক্ষা পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এ কথা জানান।
"বয়স একটা নির্ধারক। শিক্ষার্থীদের বয়স ১৮ বছরের ওপরে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো ধরনের টিকা দেওয়া যাবে। ১৮ বছরের নিচে যেসব শিক্ষার্থী আছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা ও অন্যান্য দেশে যেভাবে দেয়া হচ্ছে সেভাবেই তাদেরকে টিকা প্রদান করা হবে। বিশেষ করে আমেরিকাতে ও ব্রিটেনে শিশুদের ফাইজার এবং মডার্নার টিকা দেওয়া হচ্ছে। ১২ বছর বয়সের ওপরে এই টিকা দেওয়া হয়েছে। বাচ্চাদের টিকা কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হলে তাদের পদ্ধতিটাই আমাদের অনুসরণ করতে হবে", বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের ফাইজারের টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে। কানাডা ও যুক্তরাজ্যও সম্প্রতি ১২ বছর বয়সীদের এ টিকা দেওয়া শুরু করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, যারা স্কুলে যাবে তাদের সার্বিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে রোববার আন্ত:মন্ত্রণালয়ের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সেখানে শিক্ষার্থীদের টিকার বিষয়েও আলোচনা হবে।
মেডিকেল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮০ শতাংশের বেশি টিকা পেয়েছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, "সব শিক্ষার্থী, অর্থাৎ মেডিকেল শিক্ষার বাইরে যারা আছে, তাদেরকেও টিকাদান কার্যক্রমে নিয়ে আসা হবে। ইতোমধ্যে অনেককে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে টিকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে আমরা সবাইকে টিকা দিয়ে দিতে পারব"।
জাহিদ মালেক জানান, সরকার সাড়ে ১৬ কোটি টিকা কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে সব টিকা চলে আসবে আ্শা রেখে তিনি বলেন, "তাহলে যত শিক্ষার্থী আছে, শিক্ষক আছে, সবাই টিকার আওতায় চলে আসবে।"
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, টিকা পাওয়া গেলে আবার ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর চিন্তা করছে সরকার।
৭-১২ আগস্ট ক্যাম্পেইনের আওতায় যারা প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছে, ৭ সেপ্টেম্বর থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ দিতে যথেষ্ট টিকা হাতে রয়েছে বলে জানান তিনি।
৯২ দিন পর সংক্রমণ হার ১০ শতাংশের নিচে
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে আরও ৬১ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের কারণে গত দুইমাস টানা শতাধিক মৃত্যু হলেও গত সপ্তাহ থেকে তা কমেছে।
একই সময়ে ৯২ দিন পর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার ১০ শতাংশের নিচে নামল। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) মতে, কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হার ১০ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে 'উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ', ৫-১০ শতাংশের মধ্যে হলে 'মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ' এবং ৫ শতাংশের নিচে হলে 'স্বল্প ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে একদিনে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে আরও ১ হাজার ৭৪৩ জনের দেহে; এটিও গত ৮৪ দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।