টেলিভিশন কি আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে?
টেলিভিশনকে বোকা বাক্স বলে ডাকা নতুন কিছু নয়। অতিরিক্ত টিভি দেখা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে নষ্ট করে, এই ধারণাও বেশ পুরোনো। তবে, নতুন এক গবেষণায় এই যুক্তির পক্ষে মিলছে বৈজ্ঞানিক সমর্থন।
গবেষকরা বলছেন, অতিরিক্ত টিভি দেখায় কমে যায় মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থ। জনস হপকিনসের ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষক ড. রায়ান ডোয়ার্টির মতে, মধ্য বয়সে আপনি যত বেশি টিভি দেখবেন, আপনার ব্রেইনের ধূসর পদার্থের আয়তনও ততই কমবে।
১৯৯০ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৫৯৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক আমেরিকানের টিভি দেখার চর্চার ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় পাওয়া গেছে এই তথ্য। ডোয়ার্টি দেখতে পান, গড় সময়ের বেশি সময় ধরে যারা টিভি দেখছেন, তাদের মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল কর্টেক্স ও এন্টোরাইনাল কর্টেক্সে ক্ষয় হচ্ছে। অর্থাৎ, টিভি ব্রেইন নষ্ট করে দেয়, এরকম গতানুগতিক বক্তব্য আসলেও সত্যি।
ডোয়ার্টি বসে বসে টিভি দেখার চেয়ে অবসর যাপনের ভালো বিকল্পও বাতলে দিয়েছেন। তার মতে, বসে বোর্ড গেম খেলা টিভি দেখার চেয়ে ভালো।
বিঞ্জ ওয়াচিংয়ের এই যুগে মানুষের টিভি দেখা সম্ভবত যেকোনো সময়ের চেয়ে বেড়েছে। কোনো সিরিজের কয়েকটি এপিসোড এক বসায় দেখে ফেলা বেশ সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন জাগতে পারে, ঠিক এ কারণেই আমাদের স্মৃতিশক্তি কমে যাচ্ছে? একারণেই কি আমরা প্রায়ই আমাদের পাসওয়ার্ড, কার্ড নাম্বার ইত্যাদি ভুলে যাই?
বিষয়টি এত নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। কেননা, উল্লেখিত গবেষণায় দর্শকরা কী ধরনের অনুষ্ঠান দেখেছেন তা নিয়ে আলাদা বিশ্লেষণ করা হয়নি। আর তাই গঠনমূলক, চিন্তাশীল অনুষ্ঠান আপনার ওপর একইভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে কি না, সেটা বলাও মুশকিল।
টিভি ২১ শতকের অন্যতম সাংস্কৃতিক মাধ্যম। সুতরাং একে হুট করে ঝেড়ে ফেলা হয়তো সম্ভব না। সময়ের সঙ্গে স্মার্ট টিভির প্রযুক্তিতেও আসছে নতুনত্ব। তবে, কোনো কিছুই মাত্রাতিরিক্ত ভালো নয়। আর তাই, নিজে থেকে টিভি দেখার সময় নির্ধারণ করুন এবং সৃষ্টিশীল কোনো অনুষ্ঠান নির্বাচন করুন।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান