নতুন নাম পাচ্ছে করোনা ভাইরাস
করোনা ভাইরাস সংক্রমিত হয়ে অসুস্থ এখন হাজারো মানুষ। এর বিস্তার রোধে বন্ধ করা হয়েছে বহু সীমান্ত। উৎসস্থল চীনের অবস্থা আরও মারাত্মক। কার্যত দেশটির বিপুল অংশ এখন অবরুদ্ধ। এতসব অঘটনের মূল খলনায়ক যে ভাইরাস তার সঠিক নামকরণ কিন্তু এখনও করা হয়নি। তবে একটু দেরিতে হলেও একটি যথার্থ এবং সহজবোধ্য নামকরণ করার চেষ্টা চলছে।
অধিকাংশ গণমাধ্যমেই একে করোনা ভাইরাস বলা হচ্ছে। আসলে এর মাধ্যমে পুরো করোনা গোত্রের জীবাণুগুলোকে বোঝানো হয়। অভিযোজনের মাধ্যমে প্রাণঘাতি হয়ে ওঠা করোনা গোত্রের নতুন জীবাণুটিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোপূর্বে ২০১৯-এনসিওভি নাম দেয়। কিন্তু এমন বিদঘুটে নাম গণমাধ্যমে জনপ্রিয়তা লাভ করেনি।
ভুল নামকরণের ঝুঁকি
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নামকরণের ব্যাখ্যা দেন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর হেলথ সিকিউরিটির সহকারি অধ্যাপক ক্রিস্টাল ওয়াটসন। তিনি জানান, ২০১৯ দিয়ে যে বছর এটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছে সেই সময়কে বোঝানো হচ্ছে আর ‘এন’ মানে নভেল বা নতুন। শেষের ‘সিওভি’ হলো করোনা ভাইরাসের সংক্ষেপিত রূপ।
সাধারণ মানুষ এবং প্রচলিত গণমাধ্যম এই নাম গ্রহণ না করার পেছনে অবশ্য ব্যবহারিক অসুবিধাকেই প্রধান কারণ মনে করেন ক্রিস্টাল ওয়াটসন। তার মতে, গণমাধ্যমে দেয়া ভুল নামের কারণে নানা প্রকার জাতিগত বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার সুযোগও তৈরি হয়েছে। যেমন কিছু গণমাধ্যম এবং সাধারণ জনতা একে ‘চায়না ভাইরাস’ বলছেন।
এমন নামকরণ নির্দিষ্ট একটি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে। আধুনিক যুগে অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে এমন ভুল নামের গ্রহণযোগ্যতা তৈরিতে খুব বেশি সময়ও লাগেনা ।
নতুন নামকরণ যারা করছেন
ক্রিস্টাল ওয়াটসনসহ ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অন ট্যাক্সোনমি অব ভাইরাসেস বা আইসিটিভির সদস্য বিজ্ঞানীদের ওপর জরূরীভিত্তিতে একটি যথার্থ নামকরণের দায়িত্ব পড়েছে। অচিরেই তারা গাইডলাইন মেনে তৈরি নতুন নাম ঘোষণা করবেন।
গাইডলাইনে রয়েছে ভৌগলিক অবস্থান, মানুষ, প্রাণী ও খাদ্যের নাম এবং কোনো নির্দিষ্ট সংস্কৃতি বা শিল্পের নামে ভাইরাসের নামকরণ না করার নির্দেশনা। এসব শর্ত মেনেই নতুন নামকরণের খুব কাছাকাছি বিজ্ঞানীরা। বিবিসিকে তারা এমন কথাই জানিয়েছেন।
দশ সদস্য বিশিষ্ট আইসিটিভি কমিটি প্রধান টেক্সাস এঅ্যান্ডএম ইউনিভার্সিটির জীববিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক বেঞ্জামিন নিউম্যান। গত দুই সপ্তাহ ধরেই তার নেতৃত্বে বিজ্ঞানীরা নতুন নাম নির্ধারণে চেষ্টা করছেন। এখন নতুন নামসহ উহান শহরে পাওয়া জীবাণু বিষয়ক একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশ করবে আইসিটিভি।