বিশ্বের দীর্ঘতম কোভিড-১৯ লকডাউন শিথিল করতে যাচ্ছে মেলবোর্ন
করোনা মহামারিকালে বিশ্বের দীর্ঘতম লকডাউনের অবসান ঘটাতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। রোববার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই 'স্টে-অ্যাট-হোম' বা ঘরে থাকার আদেশ তুলে নেওয়া হবে শহরটিতে।
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২০২০ সালের মার্চ থেকে লকডাউন শুরু হয় মেলবোর্নে। অস্ট্রেলিয়ার ৫০ লাখ মানুষের আবাসস্থল, মেলবোর্নে এখন পর্যন্ত ৬টি লকডাউন দেওয়া হয়েছে। বিগত নয় মাসে সব মিলিয়ে ২৬২ দিন লকডাউনে ছিলেন শহরের বাসিন্দারা। আগামী শুক্রবারের মধ্যে কোভিড বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করা হবে।
আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আইরেসে দেওয়া ২৩৪ দিনের লকডাউনকে ছাপিয়ে মেলবোর্নই এখন বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম লকডাউনের শহর।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের রাজধানী মেলবোর্নে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের ৭০ শতাংশ অধিবাসীকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া সম্পন্ন করবে তারা। তাই কোভিড বিধি-নিষেধ শিথিল করতে এখন আর বাধা নেই তাদের।
লকডাউন তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার সময় অস্ট্রেলিয়ার লেবার পার্টির (ভিক্টোরিয়া শাখা) নেতা ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুস বলেন, "আজকের দিনটি আমাদের জন্য একটি বিশেষ দিন। আমরা ভিক্টোরিয়ানরা যা অর্জন করেছি, তার জন্য নিজেদের গর্বিত বলতে পারি।"
তবে রেস্টুরেন্ট-বার এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলো পুনরায় চালু হলেও, সেখানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধ রাখা হবে। ভিক্টোরিয়ায় বসবাসরত ৮০ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে পূর্ণ ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার পরই খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রগুলো খোলা হবে।
রোববার ভিক্টোরিয়া রাজ্যে নতুন করে ১হাজার ৮৩৮ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন সাত জন। ১০০ দিনের লকডাউন কাটিয়ে আসা, প্রতিবেশি রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলসে নতুন করে কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩০১ জন, মারা গেছেন ১০ জন। নিউ সাউথ ওয়েলসের আশি ভাগ মানুষ এরই মধ্যে পূর্ণ ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।
প্রাণঘাতী ডেল্টা ভাইরাসের সংক্রমণে হুট করেই বদলে গেছে অস্ট্রেলিয়ার পরিস্থিতি। মহামারির শুরুর দিকে কোভিড-জিরো নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে খ্যাত অস্ট্রেলিয়া ক্রমশ ভাইরাসকে সঙ্গী করে বেঁচে থাকার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে একইসঙ্গে দ্রুত টিকাদান ক্যাম্পেইনেও সফলতা লাভ করেছে তারা।
রোববার অস্ট্রেলিয়ার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার থেকে করোনা সংক্রমণমুক্ত অঞ্চল, নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ড থেকে কোয়ারেন্টিনমুক্ত ভ্রমণ চালু করা হবে। এছাড়া, সিঙ্গাপুরের সঙ্গেও ভ্রমণ, যোগাযোগ পুনরায় চালু করার ব্যাপারে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে দুই দেশ।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও, বেশকিছু উন্নত দেশের তুলনায় এখনো তা কম। দেশটিতে এখন পর্যন্ত কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার এবং মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৫৩০।
- সূত্র: রয়টার্স