বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে ফাটল: ‘ত্রুটি’ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস
চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল পরিদর্শন করে "নির্মাণ ত্রুটির" কথা জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের পর্যবেক্ষক দল। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফায়ার সার্ভিসের ইন্সপেক্টর শামসুল আলম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি জানান।
এর আগে নকশা ও কারিগরী ত্রুটির কারণে ফ্লাইওভারে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
বুধবার সকালে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মকর্তা লিফটিং ক্যারিয়ারে চড়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল পর্যবেক্ষণ করেন। আধ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে পিলারের নানা অংশ পর্যবেক্ষণ শেষে টিবিএসের সঙ্গে কথা বলেন ইন্সপেক্টর শামসুল আলম।
তিনি টিবিএসকে বলেন, "প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে আমরা পিলারে ফাটলের জায়গায় 'ত্রুটি' পেয়েছি। অনেকে ঢালাইজনিত ত্রুটির কারণে এই ফাটলের কথা বলছেন। আমাদের কাছেও সেটাই মনে হয়েছে। তবে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি আরো যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দেবেন।"
এদিকে একই সময় ফ্লাইওভারের র্যাম্পের পিলারে ফাটল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং এন্ড কনসাইনমেন্ট (ডিপিএম) এর বিশেষজ্ঞ দল। কিন্তু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের পক্ষ থেকে এ দুই প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষক দলের কর্মকর্তাদের কথা বলার চেষ্টা করা হলেও, তারা এ বিষয়ে কোনো ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস টিবিএসকে বলেন, 'মূলত ফ্লাইওভারের এ অংশটি তৈরী করা হয়েছিলো হাল্কা যানবাহনের জন্য। কিন্তু গত সিটি মেয়রের মেয়াদে নিচে রাস্তা সংস্কারের সময় ওই ব্যরিয়ারটি তুলে নেওয়া হয়। ভারী গাড়ি চলাচলের কারণে এমনটা হতে পারে। পর্যবেক্ষক দলের রিপোর্ট পাওয়ার আগে এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছেনা।"
এর আগে মঙ্গলবার বহদ্দারহাটে ফ্লাইওভারের ফাটল দেখতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এ সময় তিনি ফ্লাইওভার সুরক্ষায় সিডিএর অবহেলা আছে বলেও দাবি করেন।
যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরীর শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত এম এ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১২ সালের নভেম্বরে ফ্লাইওভারের গার্ডার ধসের ঘটনায় ১৪ জন নিহত হলে এর নির্মাণকাজ তদারকির দায়িত্ব পায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নির্মাণের চার বছর পর ফ্লাইওভারে আরাকান সড়কমুখী একটি র্যাম্প যুক্ত করেন সাবেক সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম। র্যাম্প ব্যবহার করে নগরের মুরাদপুর থেকে আসা গাড়িগুলো চান্দগাঁও ও বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের দিকে একমুখী চলাচল করে। পরে এই ফ্লাইওভারসহ চারটি ফ্লাইওভার ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চসিককে হস্তান্তর করে সিডিএ।