বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে দেশে আরও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য বিশ্বব্যাপী প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, "আমরা আরও প্রতিবন্ধকতা খুঁজে বের করব এবং আপনাদের আশ্বাস দিচ্ছি, সেগুলোর সমাধান করার মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশকে আরও সুবিধাজনক করব।"
স্কটল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। দেশে নিজস্ব বাসস্থান থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন তিনি।
আওয়ামী লীগ সরকারকে সর্বদা গণমুখী উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা সব সময় দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে।
এ সময় তিনি আরও উল্লেখ করেন, সরকার ইতোমধ্যেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের সুবিধার্থে যথাযথ চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশ থেকে দেশে টাকা পাঠানোর জন্য দুই শতাংশ প্রণোদনা চালু করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, "কেউ এই দাবি করেনি, এমনকি কেউ এটি নিয়ে ভাবেওনি। আমি নিজেই এই প্রণোদনা দিয়েছি।"
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সরকার একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশে বিনিয়োগে কিছু প্রবাসী সমস্যায় পড়ছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে গিয়ে প্রবাসীরা ঠিক কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা তিনি জানেন না।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিনিয়োগের সব বাধা দূর করতে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষকে (বিডা) প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
"লন্ডনে একটি রোড শো হবে যেখানে আমি বিডাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলব", বলেন তিনি।
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১২ বছরের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রবাসীদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে সরকার। তবে, বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগের জন্য কিছু নিয়ম-কানুন থাকায় বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দেশে প্রচলিত আইন মেনে চলার অনুরোধ করেন তিনি। তিনি বলেন, "আমি আশা করি আপনারা এটি মেনে চলবেন।"
শেখ হাসিনা আরও বলেন, দেশে বিনিয়োগ বন্ড ও প্রিমিয়াম বন্ড রয়েছে। সেই সুবিধা নিয়ে প্রবাসীরা বিনিয়োগ করতে পারেন।
তিনি আরও বলেন, সরকার প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে এবং প্রবাসীরা সেখানেও বিনিয়োগ করতে পারবেন।
এদিকে, একটি সরকারি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে মাত্র ১০টি উপজেলায় অতি-দরিদ্র মানুষ রয়েছে। তাদের এই খারাপ অবস্থায় থাকার কারণ খুঁজে বের করছে সরকার। তিনি বলেন, "আমি ইতোমধ্যেই এই পরিস্থিতি দূর করার জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশনা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা কয়েক মাসের মধ্যেই এই অবস্থার পরিবর্তন করতে সক্ষম হব। এরপর দেশে কোনো অতি-দরিদ্র মানুষ থাকবে না।"
প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, শীঘ্রই ঢাকা-নিউইয়র্ক এবং ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইট চালু করতে আলোচনার মধ্যে রয়েছে সরকার।
স্কটল্যান্ডে বিএনপির বিক্ষোভের বিষয়ে বলতে যেয়ে এই ঘটনার কারণ সম্বন্ধে প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, "আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমার দোষ কী? আমি বাংলাদেশের উন্নয়ন করেছি, দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি, বাংলাদেশের মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছি।"
বাংলাদেশের আর বিদেশিদের কাছে ভিক্ষা করার দরকার নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে ৯০ শতাংশের বেশি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। বিএনপি নিজেদের শাসনামলের সময়কার মতো দেশকে আবারও এক ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে ফেলতে চায়।"
"তাদের (বিএনপি) মতো চোরেরা ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ আবারও অন্ধকার যুগে নিমজ্জিত হবে," যোগ করেন তিনি।