কাঠমিস্ত্রির কাজ থেকে ১৫ দিনের ছুটি নিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় হলেন প্রথম
রাজশাহীর তানোরের বাঁধাইড় মিশনপাড়ায় জন্ম মোস্তাকিম আলীর। বাবা পেশায় একজন কাঠমস্ত্রি। দরিদ্র বাবার টানাপোড়েনের সংসারে হাল ধরতে প্রাথমিকের পাঠ চুকিয়েই যোগ দেন বাবার পেশায়। জীবনের লড়াইয়ে অবিচল থাকা মোস্তাকিম দিনে বাবার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করলেও রাতে করতেন পড়াশোনা।
তানোর মুন্ডুমালা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে ৪.৫৫ জিপিএ নিয়ে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এরপর ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ থেকে ২০২০ সালে ৪.৮৩ জিপিএ পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকের বৈতরণীও পেরিয়ে যান।
সেই মোস্তাকিম চমক দেখান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় এসে। শত অভাব আর না পাওয়ার মধ্যেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৩৯ হাজার ৮৯৫ জনকে পেছনে ফেলে প্রথম হয়েছেন মোস্তাকিম।
মোস্তাকিম জানান, এইচএসসি পাশের পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আদিনা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজে ইংরেজিতে স্নাতকে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আকাঙ্খা থেকে এইচএসসিতে পুনরায় মানোন্নয়ন পরীক্ষা দেন এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। প্রস্তুতির জন্য ভর্তি পরীক্ষার ১৫ দিন আগে বাবার কাছ থেকে কাঠমিস্ত্রীর কাজ হতে ছুটি নেন। এরপর পরীক্ষায় অংশ নিয়ে করেন এ দুর্দান্ত ফলাফল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর পুলিশ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংবর্ধনা দেয় মোস্তাকিমকে।
অনুষ্ঠানে আরএমপির পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, মোস্তাকিম আলীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে তার হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। সেইসঙ্গে শিক্ষা উপকরণ কেনার জন্য আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন অদম্য এই মেধাবী শিক্ষার্থীকে।