অভিষেক হচ্ছে মাহমুদুল জয়ের?
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের ১৬ সদস্যের দলে ছিলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তরুণ এই ব্যাটসম্যানের চট্টগ্রামেই অভিষেক হচ্ছে; এমনই ধরে নেওয়া হয়েছিল। এর কারণও ছিল। টেস্ট শুরুর আগের দুদিন নেটে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করতে দেখা যায় যুব বিশ্বকাপজয়ী এই সদস্যেকে। তাকে নিয়ে লম্বা সময় কাজ করেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ও ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্সও।
যদিও শেষ পর্যন্ত জাতীয় দলে অভিষেক হয়নি জয়ের। উদ্বোধনী জুটিতে বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ের জায়গাটি পূরণ করা হয় সাদমান ইসলাম অনিক ও সাইফ হাসানকে দিয়ে। কিন্তু টাইফয়েডের কারণে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন সাইফ, অভিষেকের সম্ভাবনা জেগে উঠেছে জয়ের। বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ফরম্যাট যেটাই হোক, উদ্বোধনী জুটিতে সব সময়ই বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয়ে ভরসা রাখে বাংলাদেশ। যে কারণে বিবেচনায় অনেক এগিয়ে থেকেও পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সুযোগ পাননি পারভেজ হোসেন ইমন। কারণ নাঈম শেখের মতো তিনিও বাঁহাতি। এবার একই কারণে জয় এগিয়ে। সাদমান বাঁহাতি হওয়ায় জয়ের কথাই ভাবা হচ্ছে।
ম্যাচের আগের দিন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে উদ্বোধনী জুটি নিয়ে মুমিনুল জানান, বাঁহাতি-ডানহাতি অথবা বাঁহাতি-বাঁহাতি সমন্বয় হতে পারে। তবে বাঁহাতি-ডানহাতি সমন্বয় হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এমন হলে জয়ের অভিষেক হচ্ছে, সেটা ধরেই নেওয়া যায়। কারণ ২০ সদস্যের দল হলেও জয় ছাড়া ডানহাতি ওপেনার নেই বাংলাদেশের।
মুমিনুল বলেন, 'ওপেনিং কম্বিনেশন বাঁহাতি-ডানহাতি হতে পারে। দুইজন বাঁহাতিও হতে পারে। তবে বাঁহাতি-ডানহাতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মিরপুরের উইকেট সম্পর্ক আমি আপনি সবাই জানি, খেলাটা কঠিন হয়। উইকেট দেখে যেমনটা মনে হলো, আমার কাছে মনে হয় না অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো উইকেট হবে।'
উদ্বোধনী জুটি নিয়ে বাংলাদেশের চিন্তার শেষ নেই। চট্টগ্রাম টেস্টের দুই ইনিংসেই ব্যর্থ সাদমান ও সাইফ। প্রথম ইনিংসে ১৯ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪ রানের জুটি গড়েন তারা। অবশ্য উদ্বোধনী জুটি নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই ভুগছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সাল থেকে টেস্টে ছয় ব্যাটসম্যানে ৯টি জুটি পেয়েছে বাংলাদেশ, কোনো জুটিই স্থায়ী হয়নি।
গত তিন বছরে ইমরুল কায়েস-লিটন দাস ৪ (একটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি), ইমরুল-সৌম্য সরকার ২, সাদমান-সৌম্য ২, সাদমান-তামিম ৬ (তিন পঞ্চাশোর্ধ জুটি), সাদমান-লিটন ১, ইমরুল-সাদমান ৪, সৌম্য-তামিম ২ (একটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি), সাইফ-তামিম ৭ (একটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি) ও সাইফ-সাদমান ৪ (১ বার ফিফটি জুটি) বার ইনিংস উদ্বোধন করেছেন।
৩২ ইনিংসে মাত্র ৭টি পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি এসেছে, এর মধ্যে তামিমের নামই আছে ৩টিতে। সর্বশেষ ১০০ রানের জুটি হয়েছে ২০১৭ সালের মার্চে। সৌম্য-তামিম জুটি গল টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১১৮ রান তোলে। দেশের মাঠে সর্বশেষ শতরানের উদ্বোধনী জুটি আসে ৬ বছর আগে। ইমরুল-তামিম পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১৫ সালের এপ্রিলে খুলনায় ৩১২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন। এরপর দেশের মাটিতে উদ্বোধনী জুটি থেকে বলার মতো কিছু মেলেনি, আসেনি একটিও শতরানের জুটি।