মার্কিনিদের গান বেঁধে দেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইল্লিস মিয়া
সংগীত লেখক, কম্পোজার, রেকর্ড প্রডিউসার এবং ডিজে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত আমেরিকান ইল্লিস মিয়া। নিউইয়র্কে তার জন্ম। তার কমপক্ষে ২২টি রেকর্ড বিলবোর্ড তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
জেনিফার লোপেজ, ক্রিস্টিনা অ্যাগুইলেরা, মাইলি সাইরাস, ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ, অ্যানি লেনক্স, রুপল, ললিটা হলোওয়ের মতো বাঘা বাঘা শিল্পী ও ব্যান্ডদলের সঙ্গে কাজ করেছেন কখনো গান লিখে, কখনোবা সুর তৈরি করে দিয়ে।
২০১৪ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন বুটিক রেকর্ড (নতুন ধারার স্বাধীনচেতা গান প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান) লেবেল বোদেগা সুপারেটি। বিখ্যাত শিল্পী জেমস নারেসের কন্যা জরিনা নারেস ছিল এর প্রথম গায়িকা। ২০১৪ সালের শেষ দিকে ইল্লিসের সংগীতায়োজনে জরিনার গান 'আই অ্যাম টু ব্লেম' মুক্তি পায়।
ইল্লিস মিয়া বেশ কিছু চলচ্চিত্র ও টিভি অনুষ্ঠানের সংগীতায়োজনেও যুক্ত ছিলেন। একটি যেমন 'সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি'। তার সংগীতায়োজনে রুপলের ড্র্যাগ রেসও খুব জনপ্রিয় হয়েছিল।
আইসক্রিম কোম্পানী ক্লন্ডিকের বিজ্ঞাপনের জন্য তিনি তৈরি করেছিলেন শ্যুগার ড্যাডিজ লিটল গার্ল। ২০১৩ সালে তিনি এবিসির নাইটলাইন প্রাইম থিম সঙ বুনেছিলেন কেও নোজারির সঙ্গে মিলে।
ইল্লিস এখন থাকেন লস অ্যাঞ্জেলসে। পপ, সোউল, হিপ-হপ মিলিয়ে তিনি গান রচনা করেন। রুপলের স্লে বেলেস অ্যালবামের জন্য যৌথভাবে নয়টি গান লিখেছিলেন ইল্লিস। অ্যালবামটি এন্টারটেইনমেন্ট উইকলির বেস্ট ক্রিসমাস অ্যালবামের তালিকায় উঠেছিল। সম্প্রতি তিনি কে-পপ গ্রুপ বিটিএসের 'ইনার চাইল্ড' গানের জন্য কাজ করেছেন।
এ প্রসঙ্গে অলকেপপডটকম ও জায়েহকিমডটকম তার সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে। সেখান থেকে নির্বাচিত অংশ:
অলকেপপ: কেমন লাগছে কে পপ আর্টিস্টদের সঙ্গে কাজ করে?
পপ সংগীতের এ ধরনটি অনেক পথ পেরিয়েছে। সিউল থেকে লন্ডনে এসেছে, আবার ফিরেছে সিউলে তারপর এসেছে লস অ্যাঞ্জেলেসে। অন্তত তিনটি মহাদেশ অতিক্রম করেছে কে পপ। আমার সত্যি কাজ করে মজা লাগছে। চিত্রশিল্পের মতো ভাবলে, এটা এমন একটা ক্যানভাস যেখানে সকলে রেখা টানতে পারছে এবং মিলে মিশে একটা বড় কাজ দাঁড়াচ্ছে। যুক্তরাজ্যের দল কুল কিডস আর আরকেডস আগেও বিটিএসের সঙ্গে কাজ করেছে। তারা এলএতে আমাদের স্টুডিওতে এসেছিল, আমরা একসঙ্গে জ্যামিং করেছি।
জায়েহকিম: গানটি তো অরিজিনালি কোরিয়ান ভাষায়। আপনি কাজ করছেন এর ইংরেজী সংস্করণেও ওপর। কোনো গোলমাল হচ্ছে কী?
গান আসলে প্রকাশ করে আবেগ আর অনুভূতি। কথা তার বাহনমাত্র। তাই ভাষা কোরিয়ান হলেও আবেগটা আমি ঠিকই ধরতে পারছি।
জায়েহকিম: আপনাকে কি আমরা শীঘ্র্রই কোরিয়ায় দেখতে পাব?
আমার এখুনি চলে যেতে ইচ্ছে হচ্ছে। আমার কয়েকজন গানলেখক বন্ধু কোরিয়ায় গিয়ে কর্মশালা করেছে, আমি সেসবের ছবি দেখেছি, আলাপ শুনেছি আর তখন থেকেই গাট্টি তৈরি রেখেছি কোরিয়া যাওয়ার জন্য।
জায়েহকিম: পথে পথে বা বেড়াতে বেড়াতে কি গান খুঁজে পান?
অবশ্যই খুঁজে পাই। পথেই তো গান ছড়ানো। যে খোঁজে সে পায়। ওয়াইড আওয়েক গানটা গেয়েছিল ম্যাগি জাবো। গানটি আমি আমস্টারডাম যেতে যেতে লিখেছিলাম। তারপর ওয়াক অন ওয়াটার গানটির বেশ খানিকটা লেখা হয়েছিল প্লেনে বসেই, আমি ফিরছিলাম যুক্তরাষ্ট্রে অথচ তার অল্প আগেই ফ্রান্সে আমি হৃদয় খুইয়ে এসেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্রের এখানে ওখানে গাড়ি চড়ে পাড়ি দেওয়া যায় কিন্তু ফ্রান্স তো ওই সাত সমুদ্দুরের ওপারে। আমি প্লেনে বসে ভাবছিলাম কীভাবে ওই সপ্তসিন্ধু পেরুব আর তা ভাবতেই ভাবতেই গানটি চলে আসে। ত্রিশ হাজার ফুট ওপরে প্লেনের বাথরুমে বসে ফোনে কথাগুলো রেকর্ড করে রেখেছিলাম।
জায়েহকিম: কোথায় ছুটি কাটাতে পছন্দ করেন?
আমস্টারডাম। নৌকায় ঘুরে বেড়াতে আর সাইকেল চালানোর জন্য শহরটা ভালো। লন্ডনও ভালো লাগে। লন্ডনের জ্যামাইকান প্যাটি কেম্পানীতে আমি যেতে পছন্দ করি। তারপর প্যারিসের কাছের একটা ছোট্ট শহর নাম ট্রয়েসও আমাকে টানে। ওখানকার অনেক ভবনই মধ্যযুগের।
জায়েহকিম: একটা ভ্রমণের কথা বলুন যেটা বাকি আছে, কিন্ত অবশ্যই করতে চান।
ইউরোপ থেকে ট্রেনে করে চীন যেতে চাই। হাতে অনেক সময় রাখতে চাই যেন প্রত্যেকটা স্টেশন ঘুরে ঘুরে দেখতে পারি।
- সূত্র- অলকেপপ ও জায়েহকিম