হিজাব বিতর্কে সড়ক অবরোধ ভারতীয় শিক্ষার্থীদের
ভারতের কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক ঢুকে পড়েছে পূর্বাঞ্চলীয় শহর কলকাতাতেও। বুধবার কলকাতায় শত শত শিক্ষার্থী কর্ণাটকে হিজাব নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে মিছিলে স্লোগান দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। হিজাব নিয়ে বিতর্কে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।
নারীশিক্ষা ও অধিকারকর্মী, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই, এক টুইট বার্তায় ভারতীয় নেতাদের প্রতি 'মুসলিম নারীদের প্রান্তিককরণ বন্ধ' করতে আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় মিডিয়া জানিয়েছে, গত সপ্তাহে কর্ণাটকের বেশ কয়েকটি স্কুলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী মুসলিম শিক্ষার্থীদের হিজাব পরে প্রবেশ নিষেধ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেন।
অন্যদিকে, হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার সমর্থনে একদল হিন্দু শিক্ষার্থীও পাল্টা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে কর্ণাটক রাজ্য সরকার তিনদিনের জন্য স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কর্ণাটকের এই ঘটনায় কলকাতার পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ ও পুদুচেরিতেও (পন্ডিচেরি) হিজাবের পক্ষে প্রতিবাদ হতে দেখা গেছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বুধবার কলকাতায় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা ছিলেন মূলত হিজাব পরিহিত নারী। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানাতে পেরেছেন। শিক্ষার্থীরা রয়টার্সকে আরও জানিয়েছেন, আজ বৃহস্পতিবার পুনরায় তাদের সমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের একজন তাসমিন সুলতানা বলেন, "সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত না শিক্ষার্থীদের অপমান বন্ধ করবে, আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আমরা আমাদের মৌলিক অধিকার ফেরত চাই... আপনি আমাদের অধিকার কেড়ে নিতে পারেন না।"
বুধবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছেন শিক্ষার্থীরা।
দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত কর্ণাটকের রাজ্য সরকার এক আদেশে বলেছে, শিক্ষার্থীদের স্কুল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ড্রেসকোড অনুসরণ করা উচিত। উল্লেখ্য, কর্ণাটকের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশই মুসলিম।
বিরোধী দল কংগ্রেস এবং অন্যান্য সমালোচকরা বিজেপি সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। বিজেপির বিরুদ্ধে তারা সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে মোদি তার সিদ্ধান্তের পক্ষে বলেছেন, তার সরকারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নীতির মাধ্যমে ভারতের সমস্ত জনগণ উপকৃত হবেন।
- সূত্র: রয়টার্স