হাওরের বাঁধের কাজে দুর্নীতির প্রতিবাদে ৪ কৃষকের অনশন
সুনামগঞ্জের দোয়ারাজাবাজার উপজেলার নাইন্দার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন করছেন এলাকার চারজন কৃষক।
তাদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সুনামগঞ্জ হাওর বাঁচাও আন্দোলন, কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ এবং ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দও অনশনে অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে তারা এ অনশন শুরু করেন।
অনশনকারী কৃষকরা জানান, দোয়ারাবাজার উপজেলার নাইন্দার হাওরে এ বছর ১৭টি প্রকল্পে প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। তবে এসব প্রকল্পে সরকারি নীতিমালার বাইরে গিয়ে অকৃষক, অস্থানীয় ও হাওরের প্রকৃত কৃষকদের বাদ দিয়ে একই পরিবারের একাধিক বহিরাগত লোক দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, নিয়মানুযায়ী গণশুনানি না করে প্রকল্প গ্রহণ করায় পছন্দের লোকজনই এতে স্থান পেয়েছে। ফলে তারা শুরু থেকেই বাঁধের কাজে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা করতে থাকে। যার ফলে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো ওই গুরুত্বপূর্ণ হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়নি।
এ কৃষকরা জানান, হাওরের বাঁধের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ইতোমধ্যে তারা ফসলরক্ষা কমিটির উপজেলা সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরও লিখিত আবেদন করেছেন। তারপরও অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ হয়নি। যার ফলে তারা বাধ্য হয়েই সুনামগঞ্জ শহরে এসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনির্দিষ্টকালের অনশন শুরু করেন।
অনশনকারী কৃষক হাজী আব্দুল জলিল জানান, ওই হাওরে তার প্রায় ৪ হাজার ৫০০ শতক ফসলি বোরো জমি রয়েছে। সঙ্গের অনশনকারী অন্য তিন কৃষক আব্দুন নূর, আব্দুর রউফ ও আব্দুল জলিলেরও আরো ১ হাজার ৫০০ শতক জমি রয়েছে।
তাদের অনশনের প্রতি সংহতি জানিয়ে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেনরায়, হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতা আসাদ মনি, জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি দুর্জধন দাশ দুর্জয় প্রমুখ অনশনে অংশ নেন।
অনশনকারী কৃষক হাজী আব্দুল জলিল বলেন, আমি হাওরের বাঁধের কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছি। কিন্তু তারপরেও বাঁধের কাজে দুর্নীতি থামেনি। এখনো কাজ শেষ না হওয়ায় এই হাওরের ফসল অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। তাই আমি এলাকার কৃষকের স্বার্থে এই অনশনে বসেছি।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি এডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, আমরা কৃষকদের এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছি। তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
তিনি বলেন, কৃষকদের অনশন ভাঙ্গাতে আমরা তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি।